|

৬ষ্ঠ শ্রেণির বাংলা ৬ষ্ঠ অধ্যায় ৫ম পরিচ্ছেদ – নাটক

৬ষ্ঠ শ্রেণির বাংলা ৬ষ্ঠ অধ্যায় ৫ম পরিচ্ছেদ: অভিনয়ের উপযোগী করে লেখা সংলাপ-নির্ভর রচনাকে নাটক বলে। নাটক মূলত অভিনয়ের জন্য লেখা হয়। অভিনয়ের সময় নাটকের চরিত্রগুলো একজন অন্যজনের সঙ্গে কথা বলে, সেই কথাগুলোকে বলা হয় সংলাপ। সংলাপ যাদের মুখ দিয়ে উচ্চারিত হয়, তাদের বলে চরিত্র। নাটকের কাহিনি সংলাপের মাধ্যমে এগিয়ে যায়। নাটকে এক বা একের বেশি দৃশ্য থাকে।

‘সুখী মানুষ’ নাটকে দুটি দৃশ্য আছে। প্রথম দৃশ্য মোড়লের বাড়ি, আর দ্বিতীয় দৃশ্য বনের ধারে ছোট একটি কুঁড়েঘরের সামনে। নাটক যাঁরা লেখেন তাঁদের নাট্যকার বলে। যেখানে নাটক অভিনয় করা হয়, সেই জায়গাকে বলা হয় মঞ্চ নাটকের বিভিন্ন চরিত্রে যারা অভিনয় করেন তাঁদের বলা হয় অভিনেতা। মঞ্চের সামনে বসে যাঁরা নাটক উপভোগ করেন, তাঁদের বলা হয় দর্শক। এ সবকিছু মিলেই নাটকের সার্থকতা।


৬ষ্ঠ শ্রেণির বাংলা ৬ষ্ঠ অধ্যায় ৫ম পরিচ্ছেদ

সুখী মানুষ নাটকের মূলভাব

‘সুখী মানুষ’ একটি ভিন্ন মেজাজের নাটক। এটির রচয়িতা মমতাজউদ্দীন আহমদ। এই নাটক পাঠ করে শিক্ষার্থীরা উপলব্ধি করবে যে, অন্যায় ও অনৈতিকভাবে সংগৃহীত অর্থ-বিত্তই মানুষের অশান্তির মূল কারণ। সৎ পথে নিজ পরিশ্রমের মাধ্যমে জীবিকানির্বাহ করলেই জীবনে শান্তি মেলে। সুতরাং নীতিহীন পথে সম্পদ সংগ্রহের পথ পরিহার করাই উত্তম।

‘সুখী মানুষ’ নাটকের ঘটনা ঘটেছে দুটি দৃশ্যের মধ্যে। নাটকের কাহিনিতে আছে, মানুষকে ঠকিয়ে, মানুষের মনে কষ্ট দিয়ে ধনী হওয়া এক মোড়লের জীবনে শান্তি নেই। চিকিৎসক বলেছেন, কোনো সুখী মানুষের জামা গায়ে দিলে মোড়লের অসুস্থতা কেটে যাবে। কিন্তু পাঁচ গ্রাম খুঁজেও একজনও সুখী মানুষ পাওয়া গেল না। শেষে একজনকে পাওয়া গেল, যে নিজের শ্রমে উপার্জিত আয় দিয়ে কোনো রকমে জীবিকানির্বাহ করে সুখে দিন কাটাচ্ছে। তার কোনো সম্পদ নেই, তাই চোরের ভয় নেই। সুতরাং শান্তিতে ঘুমানোর ব্যাপারে তার কোনো দুশ্চিন্তাও নেই।

অনেক সন্ধানের পর সুখী মানুষ একজন পাওয়া গেল। কিন্তু দেখা গেল, তার কোনো জামা নেই। কাজেই মোড়লের সমস্যার কোনো সমাধান হলো না। নাটকের মূল বক্তব্য— দুর্নীতির সম্পদই অশান্তির কারণ। সুখ একটা আপেক্ষিক ব্যাপার। একজনের অনেক থাকার পরও সুখ নেই। আবার আরেকজনের কিছু না থাকলেও সে সুখী থাকতে পারে। এটাই ‘সুখী মানুষ’ নাটকের মূলকথা।


৬ষ্ঠ শ্রেণির বাংলা ৬ষ্ঠ অধ্যায় ৫ম পরিচ্ছেদ কুইজ প্রশ্ন

প্রশ্ন ১। অভিনয়ের উপযোগী করে লেখা সংলাপ-নির্ভর রচনাকে কী বলে?
উত্তর: অভিনয়ের উপযোগী করে লেখা সংলাপ-নির্ভর রচনাকে নাটক বলে।

প্রশ্ন ২। নাটকে একজন অন্যজনের সাথে যেসব কথা বলে সেগুলোকে কী বলে?
উত্তর: নাটকে একজন অন্যজনের সাথে যেসব কথা বলে সেগুলোকে সংলাপ বলে।

প্রশ্ন ৩। নাটকে সংলাপ যাদের মুখ দিয়ে উচ্চারিত হয় তাদের কী বলে?
উত্তর: নাটকে সংলাপ যাদের মুখ দিয়ে উচ্চারিত হয় তাদের চরিত্র বলে।

প্রশ্ন ৪। নাটকের কাহিনি এগিয়ে যায় কিসের মাধ্যমে?
উত্তর: নাটকের কাহিনি এগিয়ে যায় সংলাপের মাধ্যমে।

প্রশ্ন ৫। নাটকের বিভিন্ন ভাগকে কী বলে?
উত্তর: নাটকের বিভিন্ন ভাগকে দৃশ্য বলে।

প্রশ্ন ৬। নাটক যেখানে অভিনয় করা হয় সেই জায়গাকে কী বলে?
উত্তর: নাটক যেখানে অভিনয় করা হয় সেই জায়গাকে মণ্য বলে।

প্রশ্ন ৭। নাটকের বিভিন্ন চরিত্রে যাঁরা অভিনয় করেন তাঁদের কী বলে?
উত্তর: নাটকের বিভিন্ন চরিত্রে যাঁরা অভিনয় করেন তাঁদের অভিনেতা বলে।

প্রশ্ন ৮৷ ‘সুখী মানুষ’ নাটকে কি নাটকের বৈশিষ্ট্য আছে?
উত্তর: হ্যাঁ, ‘সুখী মানুষ’ নাটকে নাটকের বৈশিষ্ট্য আছে।

প্রশ্ন ৯। নাটকের লাইনগুলো কি নির্দিষ্ট দৈর্ঘ্যের?
উত্তর: না, নাটকের লাইনগুলো নির্দিষ্ট দৈর্ঘ্যের নয়।

প্রশ্ন ১০। নাটক কি কয়েকটি অনুচ্ছেদে ভাগ করা?
উত্তর: না, নাটক কয়েকটি অনুচ্ছেদে ভাগ করা নয়।

প্রশ্ন ১১। সাহিত্যের কোন শাখা সংলাপ-নির্ভর?
উত্তর: সাহিত্যের নাটক শাখা সংলাপ-নির্ভর।

প্রশ্ন ১২। নাটক কি অভিনয় করা যায়?
উত্তর: হ্যাঁ, নাটক অভিনয় করা যায়।

প্রশ্ন ১৩। যারা নাটক লেখেন তাঁদের কী বলে?
উত্তর: যারা নাটক লেখেন তাঁদের নাট্যকার বলে।

প্রশ্ন ১৪। নাটক মূলত কী নির্ভর?
উত্তর: নাটক মূলত সংলাপ-নির্ভর নির্ভর।

প্রশ্ন ১৫। ‘সুখী মানুষ’ নাটকের মধ্যে কি কোনো চরিত্র আছে?
উত্তর: হ্যাঁ, ‘সুখী মানুষ’ নাটকের মধ্যে নানা চরিত্র আছে।


৬ষ্ঠ শ্রেণির বাংলা ৬ষ্ঠ অধ্যায় ৫ম পরিচ্ছেদ সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন

প্রশ্ন ১। সুখকে বড় কঠিন জিনিস বলার কারণ কী?
উত্তর: জগতের কেউই সুখী নয়। সবাই অসুখী। সবার মনেই অশান্তি কাজ করে। এই সংসারে সবাই শুধু আরও চাই আরও চাই করে। এজন্য কেউই মন থেকে তৃপ্ত হতে পারে না। তাই মুখ বড় কঠিন জিনিস।

প্রশ্ন ২। মনের মধ্যে অশান্তি থাকলে ওষুধে কাজ হয় না কেন?
উত্তর: সুখশান্তি মনের ব্যাপার। মানুষ যখন অল্পতে তুষ্ট হয়, লোভ করা থেকে বিরত থাকে, হিংসা থেকে বেঁচে থাকে, তখন তার মনে একটা প্রশন্তি কাজ করে। এই প্রশান্তিটাই সুখের মূল কারণ।

প্রশ্ন ৩। ‘সবাই অসুখী কারও সুখ নেই’ –কারণ কী?
উত্তর: মানুষ সুখের পেছনে হন্যে হয়ে ঘুরছে। ধনী বলছে আমাকে আরও ধন দাও। ভিখারি বলছে, আরও ভিক্ষা দাও, পেটুকের আরও খাবার চাই। সবার শুধু আরও চাই আরও চাই। তাই কারও মনে সুখ নেই।

প্রশ্ন ৪। ‘একটি কঠিন কর্ম করতে হবে।’— বুঝিয়ে বল।
উত্তর: মোড়লের হাড়-মড়মড় ব্যারাম হয়েছে। নিষ্ঠুর প্রকৃতির এই মোড়লকে বাঁচানোর একমাত্র উপায় হলো সুখী মানুষের জামা এনে পরানো। কিন্তু কাজটি বড় কঠিন। কারণ জগতের কেউই সুখী নয়।

প্রশ্ন ৫। “আমার কত টাকা, কত বড় বাড়ি। আমার মনে দুঃখ কেন?’ –‘সুখী মানুষ’ নাটকের মোড়লের একথা বলার কারণ কী?
উত্তর: মোড়লের অঢেল টাকা, বিরাট বাড়ি থাকা সত্ত্বেও তার মনে মুখ ছিল না। কারণ সে লোক ঠকাতো। মানুষের অধিকার নষ্ট করত। এর গোরু কেড়ে, তার ধান লুট করে মোড়ল সম্পদের পাহাড় গড়ে তুলেছিল। তাই তার মনে সুখ নেই।

প্রশ্ন ৬। ‘মানুষ এবং প্রাণী অমর নয়’— উক্তিটি বুঝিয়ে বল।
উত্তর: মানুষ এবং প্রাণীমাত্রই মরণশীল। মানুষ এবং প্রাণী জন্মের পর থেকে শৈশব, কৈশোর পাড়ি দিয়ে বার্ধক্যে পৌঁছায়। জরা, ব্যাধি তাদেরকে গ্রাস করে। এক সময় তারা মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে।

প্রশ্ন ৭। ‘সুখী মানুষ’ নাটকের একটি গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র রহমত আলী। রহমত আলী কেন গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র ব্যাখ্যা করো।
উত্তর: ‘সুখী মানুষ’ নাটকে রহমত আলী অত্যাচারী মোড়লের বাড়ির চাকর। স্বার্থ আর বিশ্বাসঘাতকতার এই সময়েও রহমত আলী মোড়লের প্রতি তার আস্থা এবং বিশ্বাসকে অটল রাখতে পেরেছিল। পুরো নাটকে রহমত আলী একমাত্র ব্যক্তি যে মন থেকে মোড়লের মঙ্গল কামনা করেছিল। রহমত আলী তার মনিবকে রক্ষা করতে সম্ভাব্য সবকিছু করতে রাজি ছিল। মোড়লের অবস্থা গুরুতর হতে দেখে রহমত আলী ভীত হয়ে পড়ে।

রহমত আলী ভয়ে হাউমাউ করে কেঁদে ফেলার উপক্রম হয়ে যায়। মোড়লের ব্যাপারে কোনো ধরনের আজেবাজে কথা শুনতে রহমত আলী নারাজ। মোড়লকে বাঁচাতে রহমত হিমালয় তুলে আনতে দৃঢ় প্রতিজ্ঞাবন্ধ ছিল। রহমত মোড়লকে পরম মমতায় মুখে শরবত ঢেলে খাওয়ায়। মোড়লের একমাত্র পথ্য সুখী মানুষের জামা আনার জন্য পাঁচগ্রাম তন্নতন্ন করে খুঁজে ফিরে। মনিবের প্রতি রহমত আলীর বিশ্বস্ততা, সততা, নিষ্ঠা, আর সরলতার জন্য রহমত আলী ‘সুখী মানুষ’ নাটকে একটি গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র।

প্রশ্ন ৮। ‘সুখী মানুষ’ নাটকের সুখী মানুষটি নিজেকে ‘সুখী মানুষ দাবি করেছে কেন?
উত্তর: ‘সুখী মানুষ’ নাটকে প্রকৃত সুখী মানুষটির চাহিদা, প্রত্যাশা, আকাঙ্ক্ষা কম। তাই তিনি এত সুখী হতে পেরেছেন। তিনি সারাদিন বনে বনে কাঠ কেটে বেড়ায়। বাজারে বিক্রি করে, যা পায় তার অতিরিক্ত কামনা করে না। চাল কিনে, ডাল কিনে মনের সুখে ডাল ভাত খেয়ে শুয়ে পড়ে। সারাদিনের পরিশ্রমের ফলে এক ঘুমে রাত পার। মনে কোনো ধরনের অস্থিরতা, না পাওয়ার বেদনা কিংবা পাওয়ার আকাঙ্ক্ষা তার নেই। বনের মধ্যে একা থাকে। চোরেরও ডয় নেই। কারণ চুরি হওয়ার মতো কোনো সঞ্চয় তার নেই। ভবিষ্যতের জন্য কোনো উচ্চাভিলাষ তার নেই। তাই সে এত সুখী।


আরও দেখুন: ৬ষ্ঠ শ্রেণির বাংলা ৫ম অধ্যায় ২য় পরিচ্ছেদ – বিবরণমূলক লেখা
আরও দেখুন: ৬ষ্ঠ শ্রেণির বাংলা ৫ম অধ্যায় ৩য় পরিচ্ছেদ – তথ্যমূলক লেখা
আরও দেখুন: ৬ষ্ঠ শ্রেণির বাংলা ৫ম অধ্যায় ৪র্থ পরিচ্ছেদ – বিশ্লেষণমূলক লেখা
আরও দেখুন: ৬ষ্ঠ শ্রেণির বাংলা ৫ম অধ্যায় ৫ম পরিচ্ছেদ – কল্পনানির্ভর লেখা
আরও দেখুন: ৬ষ্ঠ শ্রেণির বাংলা ৬ষ্ঠ অধ্যায় ১ম পরিচ্ছেদ – কবিতা
আরও দেখুন: ৬ষ্ঠ শ্রেণির বাংলা ৬ষ্ঠ অধ্যায় ২য় পরিচ্ছেদ – গান
আরও দেখুন: ৬ষ্ঠ শ্রেণির বাংলা ৬ষ্ঠ অধ্যায় ৩য় পরিচ্ছেদ – গল্প
আরও দেখুন: ৬ষ্ঠ শ্রেণির বাংলা ৬ষ্ঠ অধ্যায় ৪র্থ পরিচ্ছেদ – প্রবন্ধ


আশাকরি “৬ষ্ঠ শ্রেণির বাংলা ৬ষ্ঠ অধ্যায় ৫ম পরিচ্ছেদ প্রশ্ন উত্তর” আর্টিকেল টি আপনাদের ভালো লেগেছে। আমাদের কোন আপডেট মিস না করতে ফলো করতে পারেন আমাদের ফেসবুক পেজ, এবং লাইভ ক্লাস করতে সাবক্রাইব করতে পারেন আমাদের ইউটিউব চ্যানেল।