|

৬ষ্ঠ শ্রেণির বাংলা ৫ম অধ্যায় ৪র্থ পরিচ্ছেদ – বিশ্লেষণমূলক লেখা

৬ষ্ঠ শ্রেণির বাংলা ৫ম অধ্যায় ৪র্থ পরিচ্ছেদ: ‘কীটপতঙ্গের সঙ্গে বসবাস’ একটি বিশ্লেষণমূলক রচনা। এটির রচয়িতা আবদুল্লাহ আল-মুতী। রচনাটি কীটনাশকের সুফল ও কুফল নিয়ে রচিত। তিনি বিজ্ঞান বিষয়ক লেখক হিসেবে পরিচিত। বিজ্ঞানের অনেক জটিল বিষয় তিনি সহজ ভাষায় উপস্থাপন করেছেন। কীটনাশক ব্যবহারের ফলে কীটপতঙ্গের সঙ্গে পাখি ও মাছের মৃত্যু শুধু নয়, পরিবেশেরও ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে।


৬ষ্ঠ শ্রেণির বাংলা ৫ম অধ্যায় ৪র্থ পরিচ্ছেদ পাঠ পর্যালোচনা

বিবরণমূলক লেখার সঙ্গেও কীটপতঙ্গের সঙ্গে বসবাস’ রচনার তথ্যগত মিল রয়েছে। তবে বিশ্লেষণের ক্ষেত্রে পার্থক্য দেখা যায়। এখানে বর্ণনার পাশাপাশি বিষয়ের বিশ্লেষণধর্মিতা প্রাধান্য পেয়েছে। তথ্যমূলক লেখার সঙ্গে তথ্য ও বিষয়ের বর্ণনায় মিল খুঁজে পাওয়া যায়। পার্থক্য হলো তথ্যমূলক রচনায় বিশ্লেষণ অনেক কম থাকে, কিন্তু এ ক্ষেত্রে থাকে বেশি। কীটপতঙ্গ যে শুধু ক্ষতি করে তা নয়, এগুলো উদ্ভিদ ও মানুষের নানা রকম উপকারেও আসে।

প্রজাপতি আর মৌমাছি ফুল থেকে মধু খেতে গিয়ে ফুলে ফুলে পরাগযোগ ঘটায়, তাতেই খেতে ফসল ফলে, গাছে ফল ধরে। এসব উপকারী কীটপতঙ্গ ধ্বংস হলে কমে যায় খেতের ফসল, বাগানের ফলন। তাছাড়া অনেক পাখি আর অন্যান্য প্রাণী পোকামাকড় খেয়ে বেঁচে থাকে। কাজেই ঢালাওভাবে পোকামাকড় মেরে ফেললে সঙ্গে সঙ্গে মারা পড়তে থাকে এসব প্রাণী। কীটনাশকের ব্যবহারে নষ্ট হয় পরিবেশ ও জীবনের ভারসাম্য। ‘কীটপতঙ্গের সঙ্গে বসবাস’ রচনায় এসব বিষয় নিয়ে বিচার-বিশ্লেষণ করা হয়েছে।


কীটপতঙ্গের সঙ্গে বসবাস থেকে প্রশ্নোত্তর

ক. এই রচনাটি কোন বিষয় নিয়ে লেখা?
উত্তর: এই রচনাটি কীটনাশকের সুফল ও কুফল নিয়ে লেখা।

খ. লেখাটির মধ্যে কী কী বিশ্লেষণ আছে?
উত্তর: কীটনাশক ব্যবহারের ফলে কীটপতঙ্গের সাথে পাখি ও মাছের মৃত্যু শুধু নয়, পরিবেশেরও ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে।

গ. বিবরণমূলক লেখার সাথে এই লেখাটির কী কী অমিল আছে?
উত্তর: বিবরণমূলক লেখার সাথে এই লেখাটির অমিল হলো বিশ্লেষণের ক্ষেত্রে। এখানে বর্ণনার পাশাপাশি বিষয়ের বিশ্লেষণধর্মিতা প্রাধান্য পেয়েছে।

ঘ. তথ্যমূলক লেখার সাথে এই লেখাটির কী কী অমিল আছে?
উত্তর: তথ্যমূলক লেখার সাথে এই লেখাটির অমিল হলো বিশ্লেষণের আধিক্য। অর্থাৎ তথ্যমূলক লেখায় বিশ্লেষণ কম থাকে, এই লেখাটির ক্ষেত্রে বেশি রয়েছে।

ঙ. এই লেখা থেকে নতুন কী কী জানতে পারলে?
উত্তর: এই লেখা থেকে নতুন জানতে পেরেছি— কীটপতঙ্গ যে শুধু ক্ষতি করে তা নয়, এগুলো উদ্ভিদ ও মানুষের নানা উপকারেও আসে। আবার ঢালাওভাবে কীটনাশকের ব্যবহারে পরিবেশ ও জীবনের ভারসাম্য নষ্টও হতে পারে। লক্ষণীয় বিষয় হচ্ছে ক্ষতিকর রাসায়নিক কীটনাশকের ব্যবহারের পরিবর্তে অন্যভাবে কীটপতঙ্গ নিধন করা সম্ভব।


৬ষ্ঠ শ্রেণির বাংলা ৫ম অধ্যায় ৪র্থ পরিচ্ছেদ কুইজ প্রশ্ন

প্রশ্ন ১। যে লেখায় তথ্য ও উপাত্ত বিশ্লেষণ করা হয় তাকে কী বলে?
উত্তর: যে লেখায় তথ্য ও উপাত্ত বিশ্লেষণ করা হয় তাকে বিশ্লেষণমূলক লেখা বলে।

প্রশ্ন ২। বিশ্লেষণমূলক লেখা কয় ধরনের?
উত্তর: বিশ্লেষণমূলক লেখা দুই ধরনের।

প্রশ্ন ৩। ‘কীটপতঙ্গের সঙ্গে বসবাস’ লেখাটি কী ধরনের লেখা?
উত্তর: ‘কীটপতঙ্গের সঙ্গে বসবাস’ লেখাটি তথ্য বিশ্লেষণমূলক লেখা।

প্রশ্ন ৪। ‘কীটপতঙ্গের সঙ্গে বসবাস’-এর লেখকের নাম কী?
উত্তর: ‘কীটপতঙ্গের সঙ্গে বসবাস’-এর লেখকের নাম আবদুল্লাহ আল-মুতী।

প্রশ্ন ৫। আবদুল্লাহ আল-মুতী কী ধরনের লেখক হিসেবে পরিচিত?
উত্তর: আবদুল্লাহ আল-মুতী বিজ্ঞান বিষয়ক লেখক হিসেবে পরিচিত।

প্রশ্ন ৬। বিজ্ঞানের অনেক জটিল বিষয় কে সহজ করে উপস্থাপন করেছেন?
উত্তর: বিজ্ঞানের অনেক জটিল বিষয় আবদুল্লাহ আল-মুতী সহজ করে উপস্থাপন করেছেন।

প্রশ্ন ৭। ‘এসো বিজ্ঞানের রাজ্যে কী ধরনের বই?
উত্তর: ‘এসো বিজ্ঞানের রাজ্যে বিজ্ঞান বিষয়ক বই।

প্রশ্ন ৮। আবিষ্কারের নেশায়’, ‘রহস্যের শেষ নেই’- কার লেখা বই?
উত্তর: ‘আবিষ্কারের নেশায়’, ‘রহস্যের শেষ নেই’- আবদুল্লাহ আল- মুতীর লেখা বই।

প্রশ্ন ৯। প্রজাপতি ও মৌমাছিরা মধু খেতে গিয়ে কী করে?
উত্তর: প্রজাপতি ও মৌমাছিরা মধু খেতে গিয়ে পরাগযোগ ঘটায়।

প্রশ্ন ১০। উপকারী কীটপতঙ্গ ধ্বংস হলে কী হয়?
উত্তর: উপকারী কীটপতঙ্গ ধ্বংস হলে খেতের ফসল কমে যায়।

প্রশ্ন ১১। অনেক পাখি কী খেয়ে বাঁচে?
উত্তর: অনেক পাখি পোকামাকড় খেয়ে বাঁচে।

প্রশ্ন ১২। অনেক নদী-হ্রদের পানিতে মাছ মরে যাচ্ছে কেন?
উত্তর: অনেক নদী-হ্রদের পানিতে মাছ মরে যাচ্ছে বিষের কবলে পড়ে।

প্রশ্ন ১৩। বিষাক্ত মাছ খেয়ে কী মরে শেষ হয়ে যাচ্ছে?
উত্তর: বিষাক্ত মাছ খেয়ে নানা জাতের পাখি মরে শেষ হয়ে যাচ্ছে।

প্রশ্ন ১৪। আমাদের চারদিকে পরিবেশ মারাত্মকভাৰে দূষিত হয়ে কি কারণে?
উত্তর: আমাদের চারদিকে পরিবেশ মারাত্মকভাবে দূষিত হয়ে পড়েছে কীটনাশক ব্যবহার করার ফলে।

প্রশ্ন ১৫। আজ বিজ্ঞানীরা কীভাবে কীটপতঙ্গ দমন করার ওপর জোর দিচ্ছেন?
উত্তর: আজ বিজ্ঞানীরা প্রাকৃতিক উপায়ে কীটপতঙ্গ দমন করার ওপর জোর দিচ্ছেন।

প্রশ্ন ১৬। দিব্যি বিষকে গা-সওয়া করে নিয়ে বংশ বাড়িয়ে চলছে কে?
উত্তর: দিব্যি বিষকে গা-সওয়া করে নিয়ে বংশ বাড়িয়ে চলছে ক্ষতিকর কীটপতঙ্গ।

প্রশ্ন ১৭। পাখি কমে গেলে কীসের সংখ্যা বাড়ে?
উত্তর: পাখি কমে গেলে পোকামাকড়ের সংখ্যা বাড়ে।

প্রশ্ন ১৮। গোসাপ, ব্যাঙ মেরে শেষ করলে কী হয়?
উত্তর: গোসাপ, ব্যাঙ মেরে শেষ করলে পোকামাকড়ের সংখ্যা বেড়ে ওঠে।

প্রশ্ন ১৯। শুয়োপোকা আর মাজরাপোকা কোন ফসলের ক্ষতি করে?
উত্তর: শুয়োপোকা আর মাজরাপোকা পাটের ক্ষতি করে।

প্রশ্ন ২০। ডিম বা অল্প বয়সের কিড়া কুড়িয়ে নিয়ে আগুনে পুড়িয়ে কোন পোকা দমন করা হয়?
উত্তর: ডিম বা অল্প বয়সের কিড়া কুড়িয়ে নিয়ে আগুনে পুড়িয়ে শুয়োপোকা আর মাজরাপোকা দমন করা হয়।

প্রশ্ন ২১। যেসব পোকা রাতের বেলার আলোর দিকে ছুটে আসে সেগুলোকে কীভাবে মারা যায়?
উত্তর: যেসব পোকা রাতের বেলায় আলোর দিকে ছুটে আসে সেগুলোকে আলোর ফাঁদ পেতে মারা যায়।


৬ষ্ঠ শ্রেণির বাংলা ৫ম অধ্যায় ৪র্থ পরিচ্ছেদ অ্যাসাইনমেন্ট

অ্যাসাইনমেন্ট-১ : ভ্যাকসিন আবিষ্কার ও বাংলাদেশে টিকা কার্যক্রম সম্পর্কে একটি বিশ্লেষণমূলক লেখা লেখো।

উত্তর: বিশ্বব্যাপী মহামারী আকারে দ্রুত সংক্রমিত হওয়া করোনা ভাইরাসের ভ্যাকসিন আবিষ্কৃত হয়েছে এবং তা কার্যকরভাবে প্রয়োগও শুরু হয়েছে। এ পর্যন্ত দশটি প্রতিষ্ঠানের আবিষ্কৃত ভ্যাকসিন পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত হচ্ছে। প্রয়োগের ক্রমানুসারে এগুলো হচ্ছে- অক্সফোর্ড, অ্যাস্ট্রাজেনেকা, ফাইজার, বায়োটেক, মডার্না, সিনোফার্মা, স্পুটনিক ভি, সিনোভ্যাক, জ্যানসেন, ইপিআইভ্যাক-করোনা, কোভ্যাকসিন (ভারত বায়োটেক)। এর বাইরেও আরও কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের টিকা উৎপাদন ও প্রয়োগের পর্যায়ে রয়েছে।

কিন্তু পৃথিবীর ৭৭০ কোটি মানুষকে কার্যকরভাবে টিকা দিতে যে পরিমাণ ভ্যাকসিন উৎপাদন প্রয়োজন তা বিরাট একটা চ্যালেঞ্জ। তারপরও বিশ্বে ৮০০ কোটির বেশি ডোজ টিকা প্রয়োগ করা হয়েছে। এর মধ্যে চীনে প্রয়োগ করা হয়েছে ২০০ কোটি ডোজেরও বেশি এবং ভারতে ১০০ কোটি ডোজেরও বেশি। টিকা পাওয়ার পরপরই বাংলাদেশে টিকা কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। অক্সফোর্ডের অ্যাস্ট্রাজেনেকা, যুক্তরাষ্ট্রের ফাইজার ও মডার্না এবং চীনের তৈরি সিনোফার্মার ১০ কোটি ডোজেরও বেশি টিকা বাংলাদেশে প্রয়োগ করা হয়েছে।

অগ্রাধিকার ভিত্তিতে প্রথমে জরুরি সেবাদানকারী ব্যক্তিবর্গ, তারপর পর্যায়ক্রমে বেশি বয়সী ও নানা শ্রেণি-পেশার মানুষকে টিকা প্রদান করা হয়েছে। এরপর স্কুল-কলেজ খুলে দেওয়ার প্রয়োজনে প্রথমে শিক্ষক-কর্মচারী এবং পরে শিক্ষার্থীদের টিকার আওতায় আনা হয়েছে। বর্তমানে ১২ বছরের বেশি বয়সী শিক্ষার্থীদের টিকা প্রদান করা হচ্ছে।

অ্যাসাইনমেন্ট-২: অর্থনৈতিক উন্নয়নে নারীসমাজের ভূমিকা— এ বিষয়ে একটি বিশ্লেষণমূলক লেখা লেখো।

অর্থনৈতিক উন্নয়নে নারীসমাজের ভূমিকা

একটি দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে নারী-পুরুষ উভয়ের অংশগ্রহণই গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের অর্থনীতির দিকে লক্ষ করলে দেখা যায় যে, এ দেশের অর্থনীতিতে নারীর যথেষ্ট অবদান রয়েছে। আমাদের কৃষি, শিল্প, বাণিজ্য প্রভৃতি ক্ষেত্রে নারীরা বিশেষ অবদান রাখছে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর আদমশুমারি ও গৃহগণনা ২০১১-এর ধারাবাহিকতায় সম্প্রতি প্রকাশিত আর্থসামাজিক ও জনমিতি প্রতিবেদন অনুযায়ী অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে নারীর অংশগ্রহণ গত সাত বছরে দ্বিগুণ হয়ে ৯.৮ শতাংশে পৌঁছেছে।

পরিসংখ্যান ব্যুরোর ২০১০ সালে শ্রমশক্তি জরিপ বলছে, গৃহস্থালি কর্মকাণ্ড ছাড়া বর্তমানে দেশে ১ কোটি ৬২ লাখ নারী কর্মক্ষেত্রে রয়েছে। নিচে আমাদের অর্থনীতির বিভিন্ন ক্ষেত্রে নারীর ভূমিকা সম্পর্কে আলোচনা করা হলো। বাংলাদেশ কৃষিপ্রধান দেশ। এ দেশের অর্থনীতি কৃষির ওপর ভিত্তি করেই গড়ে উঠেছে। কৃষিক্ষেত্রে নারীর অবদান অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। স্বামী- সন্তানের কৃষিকাজে সমতালে সাহায্য করে যাচ্ছে গ্রামবাংলার কৃষকবধূরা।

ফসল উৎপাদন প্রক্রিয়ার সাথে পুরুষ বেশি জড়িত। কিন্তু প্রক্রিয়াজাতকরণের বিশাল অংশটি নারীই সম্পাদন করে। তাছাড়া বাড়ির আশপাশে পতিত জমিতে শাকসবজি চাষ করে তারা পরিবারের অর্থনৈতিক উন্নয়নে ভূমিকা পালন করছে। বর্তমানে বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের সবচেয়ে বড় খাত হলো পোশাক শিল্প। বিদেশে পোশাক রপ্তানি করে বাংলাদেশ প্রতিবছর অনেক বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করে। এই পোশাক শিল্পের প্রধান চালিকাশক্তি হলো নারী। বর্তমানে পোশাক শিল্পে প্রায় ৩০ লাখ শ্রমিক কাজ করে যার শতকরা ৮৫ ভাগই হলো নারী।

উৎপাদন শাখায় প্রায় শতকরা ৯০ ভাগই হলো নারী শ্রমিক। বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের আরও গুরুত্বপূর্ণ একটি শাখা হলো ক্ষুদ্র ও কুটিরশিল্প। ক্ষুদ্র ও কুটিরশিল্পের মধ্যে রয়েছে তাঁতশিল্প, কারুশিল্প, বয়নশিল্প প্রভৃতি। তাঁতশিল্পে নারীরাই প্রধান ভূমিকা পালন করে। নারীরা ঘরে বসে তৈরি করে বাঁশ-বেতের বিভিন্ন আসবাব ও খেলনা। এছাড়া নকশিকাঁথা, শীতলপাটি প্রভৃতি ঐতিহ্যবাহী জিনিসগুলোও তৈরি করছে নারীরা। আমাদের দেশের নারীরা চাকরির পাশাপাশি ব্যবসায়ের সাথেও নিজেদের যুক্ত করছে।

ইতোমধ্যে অনেক নারীই সফল উদ্যোক্তা হিসেবে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করেছে। বাংলাদেশে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প ফাউন্ডেশনের তথ্যমতে, দেশের ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের ৩৫ শতাংশই নারী উদ্যোক্তা। বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের আর একটি গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্র হলো চা-শিল্প। বাংলাদেশে প্রচুর পরিমাণে চা উৎপন্ন হয় এবং চা থেকে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা অর্জিত হয়। বাংলাদেশের চা-শিল্পের সাথে জড়িত শ্রমিকদের অধিকাংশই হলো নারী। 6. বাংলাদেশের অনেক নারীই এখন চিকিৎসা পেশায় আসছে। তাদের পছন্দের তালিকায় প্রথম অবস্থানেই রয়েছে চিকিৎসা পেশা।

চিকিৎসা পেশায় নারীর অংশগ্রহণে একদিকে যেমন দেশীয় অর্থনীতিতে নতুন সূচক যুক্ত হয়েছে, অন্যদিকে চিকিৎসাক্ষেত্রও অনেক উন্নত হয়েছে। শিক্ষাক্ষেত্রে নারীর অংশগ্রহণের বিষয়টি আমাদের বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। আজ তারা শিক্ষিত হয়ে শিক্ষকতা পেশাকে গ্রহণ করছে। প্রতিবছরই বিপুলসংখ্যক নারী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকতার সাথে যুক্ত হয়।

এছাড়া মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকতা পেশায় নারীরা বেশ স্বতঃস্ফূর্তভাবেই অংশগ্রহণ করছে। বাংলাদেশের অর্থনীতি এবং শিক্ষা উভয় ক্ষেত্রেই নারীর এই ভূমিকা অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। প্রবাসী আয় বাংলাদেশের অর্থনীতিকে সুদৃঢ় করেছে এবং অর্থনীতিতে যোগ করেছে এক নতুন মাত্রা। আমাদের দেশের অনেক নারী দেশের বাইরে কাজ করে।

১৯৯১ সালের এক হিসাবে দেখা যায়, তখন বছরে দুই হাজার নারীকর্মী বিদেশে গেছে। বর্তমানে দুই লাখেরও বেশি নারী শ্রমিক বিদেশে কাজ করছে। সরকারের হিসাব অনুযায়ী মোট অভিবাসী শ্রমিকের ১৩ শতাংশেরও বেশি নারী। নারী শ্রমিকরা আয়ের ৭০ শতাংশেরও বেশি দেশে পাঠায়। এসব ক্ষেত্র ছাড়াও হিমায়িত চিংড়ি, চামড়া প্রভৃতি পণ্য উৎপাদনের সঙ্গে নারী সরাসরি জড়িত। এসব শিল্পের প্রধান কাজগুলো করে নারী।


৬ষ্ঠ শ্রেণির বাংলা ৫ম অধ্যায় ৪র্থ পরিচ্ছেদ বড় প্রশ্ন

প্রশ্ন ১। বিশ্লেষণমূলক লেখা কাকে বলে? বিশ্লেষণমূলক লেখা কত প্রকার ও কী কী? বিস্তারিত বর্ণনা কর।

উত্তর: সব ধরনের লেখায় তথ্য থাকে। বিভিন্ন ধরনের ছক, সারণি ও বিবরণের মধ্যে উপাত্ত থাকে। এসব তথ্য ও উপাত্তকে বিশ্লেষণ করা হয় যেসব লেখায়, সেগুলোকে বিশ্লেষণমূলক লেখা বলে। বিশ্লেষণমূলক লেখা দুই ধরনের:
(১) তথ্য বিশ্লেষণমূলক লেখা ও
(২) উপাত্ত বিশ্লেষণমূলক লেখা।

‘কীটপতঙ্গের সঙ্গে বসবাস রচনাটি একটি বিশ্লেষণমূলক লেখা। এটি আবদুল্লাহ আল-মুতীর লেখা। তিনি বিজ্ঞান-বিষয়ক লেখক হিসেবে পরিচিত। বিজ্ঞানের অনেক জটিল বিষয় তিনি সহজ করে উপস্থাপন করেছেন। তাঁর কয়েকটি বিখ্যাত বই— ‘এসো বিজ্ঞানের রাজ্যে’, ‘আবিষ্কারের নেশায়’, ‘রহস্যের শেষ নেই’ ইত্যাদি।

প্রশ্ন ২। কীটনাশক আমাদের কী ক্ষতি করে?

উত্তর: কীটনাশক প্রয়োগের ফলে আমাদের নানাবিধ ক্ষতি হয়ে থাকে। যেমন- অনেক জাতের কীটনাশকের গুণাগুণ সহজে নষ্ট হয় না। এগুলো পানির মধ্য দিয়ে, খাবারের মধ্য দিয়ে খুব অল্পমাত্রায় প্রাণীর দেহে বা মানুষের দেহে ঢুকে সেখানে চর্বিতে বা অন্য কোথাও জমে থাকতে পারে। এভাবে কীটনাশক জমে ওঠার ফলে তার বিষক্রিয়ায় শুধু যে নানা রকম মারাত্মক রোগ হতে পারে তা নয়, মৃত্যুও ঘটতে পারে।

কীটনাশক ব্যবহার করার ফলে আমাদের চারদিকে পরিবেশ মারাত্মকভাবে দূষিত হয়ে পড়ছে। তাতে শেষ পর্যন্ত মানুষেরই ক্ষতি হচ্ছে, অথচ যেসব ক্ষতিকর কীতপতঙ্গ ধ্বংস করার জন্য কীটনাশক তৈরি হয়েছিল তারা দিব্যি বিষকে গা-সওয়া করে নিয়ে বংশ বাড়িয়ে চলেছে। তাই সকলের উচিত যতটুকু সম্ভব কীটনাশক ব্যবহার থেকে দূরে থাকা।

প্রশ্ন ৩। কীটপতঙ্গ ধ্বংস করতে রাসায়নিক কীটনাশকের বিকল্প হিসেবে কী ব্যবহার করা যায়?

উত্তর: রাসায়নিক কীটনাশক ব্যবহারের ফলে সহজে কীটপতঙ্গ ধ্বংস করা যায়। কিন্তু এই ধরনের রাসায়নিক ব্যবহারের অনেক ক্ষতিকর দিক রয়েছে। কীটনাশক ব্যবহারের ফলে আমাদের চারদিকের পরিবেশ মারাত্মকভাবে দূষিত হচ্ছে। তাই বর্তমানে রসায়নবিদগণ রাসায়নিক কীটনাশক ব্যবহারের পরিবর্তে প্রাকৃতিক উপায়ে কীটপতঙ্গ ধ্বংসের ওপর জোর দিয়েছে।

বিভিন্ন পদ্ধতি ব্যবহার করে প্রাকৃতিক উপায়ে কীটপতঙ্গ ধ্বংস করা সম্ভব ৷ যেমন— পার্টের শুয়োপাকো আর মাজরাপোকা মারার ভালো উপায় হলো তাদের ডিম বা অল্প বয়সের কিড়া কুড়িয়ে নিয়ে আগুনে পুড়িয়ে দেওয়া। অনেক পূর্ণবয়স্ক পোকা রাতের বেলায় আলোর দিকে ছুটে আসে। এসব পোকা সহজেই আলোর ফাঁদ পেতে মারা যায়। এভাবে বিভিন্ন প্রাকৃতিক পদ্ধতিতে প্রয়োজনে কীটপতঙ্গ ধ্বংস করতে হবে।

প্রশ্ন ৪। বাংলাদেশের সমুদ্র সম্পদ নিয়ে একটি বিশ্লেষণমূলক লেখা লেখো।

উত্তর: জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার তথ্য অনুসারে, বিশ্বের প্রতিবছর ৮ কোটি ৪৪ লাখ টন সামুদ্রিক খাদ্য আহরণ করা হয়। বিশ্বের মানুষের ১৫ ভাগ প্রোটিনের জোগান দিচ্ছে সামুদ্রিক মাছ, উদ্ভিদ ও জীবজন্তু । ২০১৭-২০১৮ সালে বাংলাদেশে উৎপাদিত মোট ৪৩ লাখ ৩৪ হাজার টন মাছের মধ্যে সাড়ে ছয় লাখ টন মাছ এসেছে সমুদ্র থেকে। বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ‘সেভ আওয়ার সি’-এর তথ্য অনুসারে, প্রতিবছর বঙ্গোপসাগর থেকে আশি লাখ টান মাছ ধরা হয়।

কিন্তু বাংলাদেশের জেলেরা ধরতে পারছেন মাত্র ৭ লাখ টন মাছ। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সমুদ্র বিজ্ঞান বিভাগের ইন্সটিটিউট-এর অধ্যাপক সাইদুর রহমান চৌধুরী বিবিসি বাংলাকে বলছেন, “এখনো সমুদ্র থেকে আমরা মূলত মাছ এবং চিংড়ি বেশি ধরি। কারণ খাদ্য হিসাবে বাংলাদেশিদের ভেতরে এগুলোর চাহিদাই বেশি রয়েছে। তবে ইদানীং অনেক জায়গায় অক্টোপাস, ফ্লুইড, ক্যাটলফিশ, কাঁকড়া বা ঝিনুক খাওয়ার চল তৈরি হয়েছে।”

অক্টোপাস, ক্যাটলফিশ, কাঁকড়া বা ভুইডের স্থানীয় বাজারে চাহিদা কম থাকলেও এগুলোও প্রচুর পরিমাণে ধরা হয়। কারণ এসব মাছ বিদেশে রপ্তানি হয়। তিনি জানান, বাংলাদেশের সমুদ্র থেকে মূলত লাক্ষা, রূপচাদা ও কালোচাদা, টুনা, ম্যাকারেল, লইটা, চ্যাপা, সামুদ্রিক রিটা, শাপলা পাতা মাছ, তাইল্লা, পোয়া, সুরমা, ইলিশ, ছুরি, ফাইস্যা, সামুদ্রিক বাইন ও কই মিলিয়ে প্রায় ২০টির মতো বাণিজ্যিক আকারে মাছ ধরা হয়। কারণ এসব মাছের স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক বাজারে চাহিদা রয়েছে।

সব মিলিয়ে বঙ্গোপসাগর থেকে খাদ্য হিসেবে দুইশ প্রজাতির মাছ ও চিংড়ি মিলিয়ে ৪০টির মতো মাছ নিয়মিত ধরে বাংলাদেশের জেলেরা। উপকূলীয় জেলা বরগুনার পাথরঘাটার বাসিন্দা লায়লা রুবিনা বিবিসি বাংলাকে বলেছেন, “আমাদের এখানে নদীর আর সাগরের দুই ধরনের মাছই পাওয়া যায়। আমরা সাগরের মাছটা বেশি পছন্দ করি। কারণ এটা খেতে ভালো, দামও কম। আবার আমাদের এখানে অনেক তাজা মাছ ও পাওয়া যায়।


আরও দেখুন: ৬ষ্ঠ শ্রেণির বাংলা ৪র্থ অধ্যায় – চারপাশের লেখার সাথে পরিচিত হই
আরও দেখুন: ৬ষ্ঠ শ্রেণির বাংলা ৫ম অধ্যায় ১ম পরিচ্ছেদ – প্রায়োগিক লেখা
আরও দেখুন: ৬ষ্ঠ শ্রেণির বাংলা ৫ম অধ্যায় ২য় পরিচ্ছেদ – বিবরণমূলক লেখা
আরও দেখুন: ৬ষ্ঠ শ্রেণির বাংলা ৫ম অধ্যায় ৩য় পরিচ্ছেদ – তথ্যমূলক লেখা


আশাকরি “৬ষ্ঠ শ্রেণির বাংলা ৫ম অধ্যায় ৪র্থ পরিচ্ছেদ প্রশ্ন উত্তর” আর্টিকেল টি আপনাদের ভালো লেগেছে। আমাদের কোন আপডেট মিস না করতে ফলো করতে পারেন আমাদের ফেসবুক পেজ, এবং লাইভ ক্লাস করতে সাবক্রাইব করতে পারেন আমাদের ইউটিউব চ্যানেল।