|

৬ষ্ঠ শ্রেণির বাংলা ৫ম অধ্যায় ১ম পরিচ্ছেদ – প্রায়োগিক লেখা

৬ষ্ঠ শ্রেণির বাংলা ৫ম অধ্যায় ১ম পরিচ্ছেদ: প্রায়োগিক লেখা বলতে বোঝায় ৰাস্তব জীবনের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত রচনা। জাহানারা ইমাম রচিত ‘একাত্তরের দিনগুলি’ রচনাটি মূলত প্রায়োগিক লেখা। কোন তারিখের কোন দিনে তিনি কী করেছেন তার বর্ণনা দিয়েছেন। এই বর্ণনা সম্পূর্ণ তাঁর বাস্তব জীবন সম্পর্কিত। যেমন ২৩ মার্চ ১৯৭১, মঙ্গলবার উল্লেখ করে তিনি তাঁর জীবনে ঘটে যাওয়া দিনের বর্ণনা করেছেন শহিদ মিনারে ঘুরে দেখার মাধ্যমে।


৬ষ্ঠ শ্রেণির বাংলা ৫ম অধ্যায় ১ম পরিচ্ছেদ পাঠ পর্যালোচনা

জাহানারা ইমাম রচিত ‘একাত্তরের দিনগুলি’ শীর্ষক দিনপঞ্জির আকারে লেখা মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে স্মৃতিচারণমূলক গ্রন্থ থেকে পাঠ্যভুক্ত অংশটুকু গৃহীত হয়েছে। এখানে আছে ১৯৭১ সালের তিন দিনের ঘটনা। মুক্তিযুদ্ধের পূর্বকালীন উত্তেজনা, আন্দোলন ও আতঙ্কের বিষয় নিয়ে অংশটুকু লেখা। এখানে লেখক নাশতা বানানো, স্বাধীন বাংলাদেশের নতুন পতাকা ওড়ানো, শহিদ মিনারে গিয়ে অংশগ্রহণ ইত্যাদি কাজের উল্লেখ করেছেন।

‘একাত্তরের দিনগুলি’ রচনা থেকে জানা যায়, ১৯৭১ সালের ১৯ মার্চ জাহানারা ইমামের ছেলে রুমী অভিনব স্টিকার নিয়ে এসেছে– ‘একেকটি বাংলা অক্ষর একেকটি বাঙালির জীবন’। বাংলায় লেখা স্টিকার এই প্রথম দেখা গেল। রুমী খুব যত্ন করে স্টিকারটা গাড়ির পেছনের কাছে লাগায়। স্টিকারের পরিকল্পনা ও ডিজাইন করেছেন শিল্পী কামরুল হাসান।

‘একাত্তরের দিনগুলি’ রচনা থেকে অনেক নতুন বিষয় জানা যায়। যেমন মুক্তিযুদ্ধের প্রাক্কালে সকল শ্রেণি-পেশার মানুষ কীভাবে আতঙ্কিত ও উত্তেজিত ছিলেন, ছোটো ছেলে রুমী কীভাবে গাড়ির কাচে স্টিকার লাগিয়ে নিজের আবেগ ও সাহস প্রকাশ করেছে ইত্যাদি। ১৯৭১ সালের ২৩ মার্চ যে প্রতিরোধ দিবস এবং শাপলা ফুল যে সংগ্রামী বাংলার প্রতীক তাও এখান থেকে জানা যায়। বিশেষভাবে লক্ষণীয় মনে হয়েছে স্বাধীনতা সংগ্রামে জনমনে বিপুল সাড়া ও উত্তেজনার ঘটনা। এই রচনা পড়ে এবং চর্চা করে শিক্ষার্থী রোজনামচা লেখায় অনুপ্রাণিত হবে।


৬ষ্ঠ শ্রেণির বাংলা ৫ম অধ্যায় ১ম পরিচ্ছেদ কুইজ প্রশ্ন

প্রশ্ন ১। ‘একাত্তরের দিনগুলি’ নামের বইটি কে লিখেছেন?
উত্তর: ‘একাত্তরের দিনগুলি’ নামের বইটি জাহানারা ইমাম লিখেছেন।

প্রশ্ন ২। জাহানারা ইমামের পুত্র রুমী গেরিলা যুদ্ধে অংশগ্রহণ করে কী হন?
উত্তর: জাহানারা ইমামের পুত্র রুমী গেরিলা যুদ্ধে অংশগ্রহণ করে শহিদ হন।

প্রশ্ন ৩। জাহানারা ইমাম কী নামে পরিচিত?
উত্তর: জাহানারা ইমাম শহিদ জননী’ নামে পরিচিত।

প্রশ্ন ৪। রুমী কবে অভিনব স্টিকার নিয়ে এসেছিলেন?
উত্তর: রুমী ১৯৭১ সালের ১৯ মার্চ অভিনব স্টিকার নিয়ে এসেছিলেন।

প্রশ্ন ৫। ১৯৭১ সালের ১৯ মার্চ কী বার ছিল?
উত্তর: ১৯৭১ সালের ১৯ মার্চ শুক্রবার ছিল।

প্রশ্ন ৬। রুমীর অভিনব স্টিকারে কী লেখা ছিল?
উত্তর: রুমীর অভিনব স্টিকারে ‘একেকটি বাংলা অক্ষর একেকটি বাঙালির জীবন’ লেখা ছিল।

প্রশ্ন ৭। রুমী খুব যত্ন করে স্টিকারটি কোথায় লাগালেন?
উত্তর: রুমী খুব যত্ন করে স্টিকারটি গাড়ির পেছনের কাচে লাগালেন।

প্রশ্ন ৮। অভিনব স্টিকারটি ডিজাইন করেছেন কে?
উত্তর: অভিনব স্টিকারটি ডিজাইন করেছেন শিল্পী কামরুল হাসান।

প্রশ্ন ৯। শিল্পী কামরুল হাসান নিজেকে শিল্পী না বলে কী বলতেন?
উত্তর: শিল্পী কামরুল হাসান নিজেকে শিল্পী না বলে ‘পটুয়া কামরুল হাসান’ বলতেন।

প্রশ্ন ১০। ‘বাংলার পটুয়া সমাজ’ বলে সমিতি গঠন করেন কে?
উত্তর: ‘বাংলার পটুয়া সমাজ’ বলে সমিতি গঠন করেন শিল্পী কামরুল হাসান।

প্রশ্ন ১১। শাপলা ফুলকে সংগ্রামী বাংলার প্রতীক হিসেবে গ্রহণ করার এক প্রস্তাব নেওয়া হয় কোন সভার?
উত্তর: শাপলা ফুলকে সংগ্রামী বাংলার প্রতীক হিসেবে গ্রহণ করার এক প্রস্তাব নেওয়া হয় ‘বাংলার পটুয়া সমাজ’-এর সভায়।

প্রশ্ন ১২। ২২ মার্চ ১৯৭১ সাল কী বার ছিল?
উত্তর: ২২ মার্চ ১৯৭১ সাল সোমবার ছিল।

প্রশ্ন ১৩। ১৯৭১ সালের ২৩ মার্চ কী দিবস পালন করা হয়?
উত্তর: ১৯৭১ সালের ২৩ মার্চ ‘প্রতিরোধ দিবস’ পালন করা হয়।

প্রশ্ন ১৪। প্রতিরোধ দিবসের জন্য জনমনে কী হয়েছিল?
উত্তর: প্রতিরোধ দিবসের জন্য জনমনে বিপুল সাড়া ও উদ্দীপনা হয়েছিল।

প্রশ্ন ১৫। ২৩ মার্চ ১৯৭১ খুব সকালে লেখিকা কী করেন?
উত্তর: ২৩ মার্চ ১৯৭১ খুব সকালে লেখিকা সবাইকে নিয়ে ছাদে গিয়ে কালো পতাকার সঙ্গে স্বাধীন বাংলাদেশের নতুন পতাকা ওড়ান।

প্রশ্ন ১৬। ২৩ মার্চ ১৯৭১ শহিদ মিনারের সামনে গিয়ে লেখিকা কী দেখলেন?
উত্তর: ২৩ মার্চ ১৯৭১ শহিদ মিনারের সামনে গিয়ে লেখিকা কামবুল হাসানের আঁকা কয়েকটা দুর্দান্ত পোস্টার দেখলেন।

প্রশ্ন ১৭। কী করতে হবে তা ঠিক করাকে এককথায় কী বলে?
উত্তর: কী করতে হবে তা ঠিক করাকে এককথায় পরিকল্পনা বলে।

প্রশ্ন ১৮। লিখে বা ছবি এঁকে কিছু বোঝানো হয় এমন কাগজকে কী বলে?
উত্তর: লিখে বা ছবি এঁকে কিছু বোঝানো হয় এমন কাগজকে পোস্টার বলে।

প্রশ্ন ১৯। কার নির্দেশে প্রতিরোধ দিবস পালিত হয়?
উত্তর: বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নির্দেশে প্রতিরোধ দিবস পালিত হয়।

প্রশ্ন ২০। কোথাও লাগানো যায় এমন কাগজের টুকরাকে কী বলে?
উত্তর: কোথাও লাগানো যায় এমন কাগজের টুকরাকে স্টিকার বলে।


৬ষ্ঠ শ্রেণির বাংলা ৫ম অধ্যায় ১ম পরিচ্ছেদ অ্যাসাইনমেন্ট

অ্যাসাইনমেন্ট-১: মারিফার কাছে একটা বড়ো নোটবুক আছে। রোজ রাতে ঘুমানোর আগে সারাদিন কী কী করেছে তা সে লিখে রাখে। বলতে পারবে এ ধরনের লিখে রাখার পদ্ধতিকে কী বলে? মানুষ এটা কেন লেখে?

এ ধরনের লেখাকে বলে ‘রোজনামচা’। রোজনামচা একধরনের ব্যক্তিগত লেখা। প্রতিদিনের নতুন কোনো বিষয়, তথ্য, ঘটনা, আবেগ ও অনুভূতির কথা মানুষ তার ব্যক্তিগত নোটবুক বা ডায়েরিতে লিখে রাখে। রোজনামচা লেখার মাধ্যমে মানুষ স্মৃতি ধরে রাখার চেষ্টা করে। অনেকদিন পর মানুষ যখন তার রোজনামচা লেখার পুরোনো নোটবুক খুলে পড়ে তখন সে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়ে। কোনো কোনো লেখা পড়ে ঠোঁটের কোণে হাসি জমে। কোনো লেখা পড়ে আবার তার চোখের কোণে জল জমে।

অ্যাসাইনমেন্ট-২: মুক্তিযুদ্ধে রফিকুল ইসলাম তাঁর ছেলেকে হারান। পরবর্তী সময়ে এলাকাবাসী তাঁকে সম্মানসূচক শহিদের পিতা’ উপাধি দেয়। বলো তো, এ ঘটনার সাথে তোমার বাংলা বইয়ের কোন ঘটনার মিল রয়েছে?

এ ঘটনার সাথে ‘একাত্তরের দিনগুলি’ পাঠের লেখক জাহানারা ইমামের জীবনের মিল রয়েছে জাতানারা ইমামকে বলা হয় শহিদ জননী। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে তাঁর ছেলে রুমী গেরিলা যুদ্ধে অংশ নিয়েছিলেন। পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর গুলিতে তিনি শহিদ হন। তখন জাহানারা ইমামকে শহিদ জননী’ উপাধি দেওয়া হয়। দেশের সবাই তাঁকে ‘শহিদ জননী’ বলেই চেনে।

অ্যাসাইনমেন্ট-৩: মনে করো তুমি রুহি। তুমি তোমার জীবনে ঘটে যাওয়া বিশেষ ঘটনা ডায়েরিতে লিখে রাখো। এখন তুমি বই মেলা দেখার অনুভূতি এবং বই মেলায় ঘুরতে যাওয়ার রোজনামচা তুলে ধরো।

৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩
রাত ১০টা ৪৫ মিনিট

গত বছর বইমেলার স্মৃতি আমি কখনই ভুলতে পারব না। সকালের পড়া শেষ করে স্কুলে গেলাম। আমাদের বাংলা শিক্ষকের কাছে কয়েকটি বইয়ের নাম চাইলাম, বইমেলা থেকে যেগুলো কিনতে পারি। তিনি আনন্দচিত্তে তা লিখে দিলেন। সেগুলোর সঙ্গে আমার তালিকায় রাখা বইয়ের নাম স্যারকে দেখালাম। তিনি কোনো কোনোটির প্রয়োজন নেই বললেন। আমি তা মেনে নিলাম। বাসায় ফিরে দুপুরের খাবার খেয়ে মেলায় যাওয়ার জন্য তৈরি হলাম। মাকে বললাম বই কেনার কথা। মা টাকা দিলেন, বললেন রাত আটটার আপে বাসায় ফিরতে।

বড়ো ভাইয়া আমাকে নিয়ে গেল। বাংলা একাডেমি আয়োজিত একুশের বইমেলার উদ্দেশ্যে বাসা থেকে বের হলাম বিকেল তিনটা ত্রিশ মিনিটে। ভিড় ছিল না, লাইনে বেশিক্ষণ দাঁড়াতে হলো না; ভিতরে ঢুকে গেলাম। প্রথমেই কিনলাম বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’, জাহানারা ইমামের ‘একাত্তরের দিনগুলি’। মেলায় তালিকার সব বই পেলাম না। এরপর আমার প্রিয় লেখক জাফর ইকবালের কিছু বই কিনলাম।

হঠাৎ দেখলাম জাফর ইকবাল স্যার একটি স্টলে বসে পাঠকদের অটোগ্রাফ দিচ্ছেন। আমি তাকে সরাসরি দেখে সত্যিই হতবাক হয়ে গেলাম। যার বই সেই ছোটোবেলা থেকে পড়ে আসছি তাকে আজ বাস্তবে দেখে, কথা বলে, অটোগ্রাফ নিয়ে খুবই আনন্দিত হলাম। আর এ কারণেই এই বইমেলা আমার কাছে স্মরণীয় হয়ে আছে।

আগারগাঁও, ঢাকা।


৬ষ্ঠ শ্রেণির বাংলা ৫ম অধ্যায় ১ম পরিচ্ছেদ এক কথায় প্রকাশ

(ক) কোথাও লাগানো যায় এমন কাগজের টুকরা -স্টিকার।
(খ) কয়েকজন মিলে তৈরি করা সংগঠন – সমিতি।
(গ) কী করতে হবে তা ঠিক করা – পরিকল্পনা।
(ঘ) যা নাড়া দেয় – আলোড়ন ।

(ঙ) যা বয়ে চলেছে – প্রবহমান।
(চ) যা করতে চাওয়া হয় – প্রস্তাব।
(ছ) লিখে বা ছবি এঁকে কিছু বোঝানো হয় এমন বড়ো কাগজ – পোস্টার।
(জ) উত্তেজনার অনুভূতি — শিরশির।
(ঝ) যা উদ্দীপ্ত করে — উদ্দীপনা।


৬ষ্ঠ শ্রেণির বাংলা ৫ম অধ্যায় ১ম পরিচ্ছেদ অনুশীলনীর প্রশ্ন

প্রশ্ন ১। তোমার বিদ্যালয়ের বিতর্ক প্রতিযোগিতার রোজনামচা লেখো।

২৮ জুলাই, ২০২৩
রাত ১১টা ৪২ মিনিট
সূর্যের প্রথম লালচে আলো আমার কক্ষের জানালা গলে প্রবেশ করছে। আলোর রেখা এসে পড়েছে ঠিক দুচোখের ওপর। ঘুম ভেঙে গেল স্বপ্ন দেখার মতো। বিছানা ছেড়ে তাড়াতাড়ি ফ্রেশ হয়ে নিলাম। শাহরিয়ার ভাই বিতর্কের ওপর দুটো বই দিয়েছিলেন মনোযোগ দিয়ে পড়ার জন্য । পড়েছি তবে বিষয়ের ওপর আর একটু দেখতে হবে। এক গ্লাস পানি খেয়ে পড়তে বসে গেলাম। কিরণ ভাইয়ের লেখা বই। তার কাছে বিতর্কের ওপর প্রশিক্ষণ নেওয়ার সুযোগ হয়েছে আমার।

বইটা পড়ে বিষয়ের বিপক্ষে বলার মতো অনেক কিছু পেয়ে গেলাম। তাছাড়া নিজেকেও আরও সমৃদ্ধ করতে পারলাম। মা ডাকছিলেন নাশতা খেতে অনেকক্ষণ ধরে । এবারে আর সাড়া না দিয়ে পারলাম না। কারণ নয়টার বেশি বেজে গেছে। তৈরি হয়ে নিলাম দ্রুত। তারপর নাশতা খেতে বসলাম। খাচ্ছিলাম ঠিকই, কিন্তু মনোযোগ ছিল বিতর্কের বিষয়ের দিকে। বাবা এসে বসলেন পাশে। বললেন, কী, টেনশন হচ্ছে নাকি? বিষয়ের ওপর তোমার ভালো প্রস্তুতি আছে, তাছাড়া আমার কাছে প্র্যাকটিস করেছ, কাজেই টেনশনকে ডোন্ট কেয়ার।

তবে এখন যেটা করতে হবে তা হলো, তুমি তোমার টিম নিয়ে আধা ঘণ্টা বসে পুরো বিষয়টা শেয়ার করবে। হ্যাঁ বাবা, আমি এতক্ষণ তোমার এই কথাটা নিয়েই ভাবছিলাম যে কী কী পয়েন্টের ওপর শেয়ার করব এবং টিমকে জিতিয়ে আনব। বাবা অভয় দিলেন, আই অ্যাম সিওর তোমরা জিতবে। রিকশায় করে বিদ্যালয়ে এলাম। আমার টিম নিয়ে বসলাম নির্ধারিত কক্ষে। ওদের পক্ষ থেকে কী ধরনের প্রশ্ন এবং কী কী পয়েন্ট আসতে পারে, প্রাসঙ্গিকভাবে কী কী অনুষঙ্গ যোগ হতে পারে সেসব নিয়ে খোলামেলা আলোচনা করলাম।

আমরা কী কী অনুষঙ্গ যোগ করব, কী কী পয়েন্টের ওপর বলব এবং প্রশ্ন ছুড়ে দেওয়ার কী কৌশল অবলম্বন করব তা নিয়ে মোটামুটি প্রস্তুতি নিয়ে নিলাম। এবার যুদ্ধের ময়দানে তাঁর প্রতিহত করে তীর ছোড়ার পালা। বিতর্ক প্রতিযোগিতার মডারেটর শাহরিয়ার ভাই এবং বিচারক হচ্ছেন বাইরের তিন বিদ্যালয়ের তিনজন শিক্ষক। মডারেটর বিতর্কের বিষয় ঘোষণা করলেন নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের মূল্য বৃদ্ধির জন্য কেবল সিন্ডিকেটই দায়ী।’

সেই পক্ষ-বিপক্ষ দলের নেতা ও বিতার্কিকদের নামও ঘোষণা করলেন। একে একে বিষয়ের পক্ষ দলের বিতার্কিক ও বিপক্ষ দলের বিতার্কিকরা তাদের বক্তব্য খুবই যুক্তিপূর্ণ ও আকর্ষণীয়ভাবে উপস্থাপন করল। এবারে দুই নেতার বক্তব্য খন্ডনের পালা। বিষয়ের পক্ষ দলের নেতা বক্তব্য দিতে গিয়ে এমন এক বিষয়ের অবতারণা করল যা সম্পূর্ণ অপ্রাসঙ্গিক। আমি তার বক্তব্য খন্ডন করে অপ্রাসঙ্গিক বিষয়ের ওপর এমন কৌশলী বক্তব্য ছুড়ে দিলাম যে ওই পক্ষ ধরাশায়ী হয়ে গেল।

বিচারকদের রায়ে আমরা বিজয়ী হলাম এবং আমাকে শ্রেষ্ঠ বস্তা ঘোষণা করা হলো। বিতর্ক প্রতিযোগিতার ফল বাবাকে জানিয়ে দিলাম। বাবা মিষ্টি নিয়ে হাজির হলেন। দুদলকে অভিনন্দন জানিয়ে মিষ্টি খাওয়ালেন। ওদেরকে নিয়ে বাসায় এসে খাওয়া-দাওয়া করলাম। অনেক রাত পর্যন্ত আড্ডা দিলাম। রাতের খাবার খেয়ে ওরা চলে গেল। আর আমি ক্লান্ত দেহ এলিয়ে দিলাম বিছানায়।
নকলা, শেরপুর।

প্রশ্ন ২। ঢাকা চিড়িয়াখানা পরিদর্শন সম্পর্কে রোজনামচা লেখো।

২২ ডিসেম্বর,
২০২৩ রাত ১০:০০ মিনিট
পূর্বপরিকল্পনা অনুসারে আজ আমি, নয়ন, অপূর্ব বড়ো ভাইয়ার সঙ্গে ঢাকা চিড়িয়াখানা (মিরপুর চিড়িয়াখানা) পরিদর্শনে গিয়েছিলাম। সকাল নয়টায় বাসা থেকে বের হয়ে আমরা মিরপুর জাতীয় স্টেডিয়ামের গেটে মিলিত হলাম। সেখান থেকে রিকশা করে চিড়িয়াখানা পেট। যথারীতি টিকেট করে ভিতরে ঢুকলাম। এখানে বহুবার এসেছি। সেসব আসার পেছনে আনন্দের বাইরে অন্য কোনো উদ্দেশ্য ছিল না।

আজকে আসার মূল উদ্দেশ্য বিভিন্ন প্রাণীর নাম, বৈশিষ্ট্য এবং তাদের আহার ও পরিবেশ সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করা। শুক্রবার বলেই কি না জানি না, লোকজনের প্রচুর ভিড়। এত মানুষের ভিড়ের মধ্যে নোটবুকে প্রাণীর সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করতে আমাদের অনেক বেগ পেতে হয়েছে। এখানে বাঘ, সিংহ প্রভৃতি প্রাণীকে যথেষ্ট সতেজ মনে হয়নি, কেমন যেন নেতিয়ে পড়েছে। প্রয়োজনীয় খাবার, পরিবেশ ও যত্নের অভাবেই হয়তো তা হয়েছে। হাতির অবস্থাও তাই।

ময়ূর, জেব্রা, জিরাফ দেখে মুগ্ধ হলাম। দুর্গন্ধের জন্য বানরের খাঁচার সামনে বেশিক্ষণ দাঁড়াতে পারিনি। অজগর সাপ, কুমির! প্রভৃতির থাকার পরিবেশ আরও যথার্থ হওয়া দরকার। ঘুরে ঘুরে নানা রকম দেশি-বিদেশি জীবজন্তু দেখে দুপুরের খাবার খেলাম দুপুরের অনেক পরে। বিকেলে বাসায় ফিরে ক্লান্ত হয়ে পড়লাম। নয়ন ফোন করে জানাল সন্ধ্যায় আর বের হবে না। আমি অপূর্বকে খবরটা জানিয়ে রাতের খাবার খেয়ে ঘুমাতে গেলাম। রাজারবাগ, ঢাকা।

প্রশ্ন ৩। সুন্দরবন ভ্রমণের বর্ণনা দিয়ে একটি রোজনামচা রচনা করো।

১৭ ফেব্রুয়ারি,
২০২৩ রাত ১০: ৫০ মিনিট
সুন্দরবন ভ্রমণ সালমান রুশদি ১৯৮১ সালে প্রকাশিত তাঁর মিডনাইটস চিলড্রেন’ উপন্যাসে সুন্দরবনের সৌন্দর্য-রহস্য সম্পর্কে মন্তব্য করেছিলেন- জাদুময়, অপরিমেয়, অননুমেয়। পৃথিবীর ম্যানগ্রোভ বনাঞ্চলের মধ্যে অনন্য সুন্দর সুন্দরবন ভ্রমণ করতে গিয়ে আমারও সেই অনুভূতি হয়েছে। পরিবারের সবার সাথে বন বিভাগের লঞ্চে করে হিরণ পয়েন্ট এলাকায় গেলাম।

ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত বাঘ-হরিণের চারণভূমিতে ধীরে ধীরে নতুন ডালপালা-পাতাসমৃদ্ধ বন গড়ে উঠছে দেখে ভালো লাগল নানা রঙের অনেক পাখি চোখে পড়ল, কিন্তু বানর বা হরিণ দেখা গেল না। একটা খালের ভেতর বেশ কিছুদূর ঢুকল লঞ্চটি। কাঁকড়া, বেজি চোখে পড়ল। বানরের শব্দ শুনে উপরে গাছের দিকে তাকাতেই কয়েকটা বানর দেখলাম। কেউ ফল খাচ্ছে, কেউ লাফাচ্ছে বা ডাল ঝাঁকাচ্ছে। জেলে বা বাওয়ালি কাউকে দেখলাম না। কাদার উপর বাঘের পায়ের ছাপ দেখালেন একজন খালাসি। লঞ্চ দ্রুত ফিরে এলো বন বিভাগের বাংলোয়। নদীর তাজা মাছ রান্না হয়েছে। মজা করে খাওয়া-দাওয়া সেরে রওয়ানা হলাম ঢাকার উদ্দেশ্যে।
ঢাকা।

প্রশ্ন ৪। বর্ষণমুখর দিন/ সন্ধ্যা সম্পর্কে রোজনামচা লেখো।

১৪ জুন,
২০২৩ রাত ১১ : ৪৫ মিনিট
বর্ষণমুখর দিন/বর্ষণমুখর সন্ধ্যা আজ সারাদিন থেমে থেমে বৃষ্টি হলো। বিকেলে মাঠে যাওয়া হলো না। কী করে যাব, অবিরাম বৃষ্টি। শ্রাবণের বর্ষণের মধ্যেই দিনের সূর্য হারিয়ে সন্ধ্যা নেমে এলো। একইভাবে অশান্ত বর্ষণ। মেঘের কালো ছায়ায়, বৃষ্টিতে, ঝড়ো হাওয়ায়, ঘন ঘন মেঘের গুরু গুরু ডাকে অদ্ভুত একটা মায়াবী পরিবেশ লক্ষ করলাম আজ সন্ধ্যায়। রবীন্দ্রনাথের কবিতা মনে পড়ল, গান মনে পড়ল।

এসবের মধ্যেও মনে পড়ল। হাঘরে-হাভাতে মানুষের কথা। বর্ষণমুখর সন্ধ্যার রূপ কবির কাছে যেভাবে ধরা পড়ে ক্ষুষার্তের কাছে সেভাবে ধরা পড়ে না। অতিবৃষ্টিতে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়। কৃষকের ফসলের ক্ষতি হয়। শ্রমজীবী মানুষের ডোপাঝি বাড়ে। “ওগো, আজ তোরা যাসনে ঘরের বাহিরে”; আর যাদের ঘর নেই, তারা কোথায় যাবে? মানুষ যদি মানবিক হয় তবেই এদের রক্ষা, কবির কথার সার্থকতা; নচেৎ তা নয়। সারাদিন কালিদাসের ‘মেঘদূত’ পড়েও আমার মন থেকে অসহায় মানুষের করুণ মুখ মুছে ফেলতে পারলাম না।
গাজীপুর।


আরও দেখুন: ৬ষ্ঠ শ্রেণির বাংলা ৪র্থ অধ্যায় – চারপাশের লেখার সাথে পরিচিত হই


আশাকরি “৬ষ্ঠ শ্রেণির বাংলা ৫ম অধ্যায় ১ম পরিচ্ছেদ প্রশ্ন উত্তর” আর্টিকেল টি আপনাদের ভালো লেগেছে। আমাদের কোন আপডেট মিস না করতে ফলো করতে পারেন আমাদের ফেসবুক পেজ, এবং লাইভ ক্লাস করতে সাবক্রাইব করতে পারেন আমাদের ইউটিউব চ্যানেল।