|

৬ষ্ঠ শ্রেণির বাংলা ৬ষ্ঠ অধ্যায় ৩য় পরিচ্ছেদ – গল্প

৬ষ্ঠ শ্রেণির বাংলা ৬ষ্ঠ অধ্যায় ৩য় পরিচ্ছেদ: গল্প সাধারণত পদ্যে বর্ণিত হয়। এর বৈশিষ্ট্যগুলোর মধ্যে রয়েছে কাহিনি, চরিত্র, সংলাপ, গদ্যভাষা। আলোচ্য পরিচ্ছেদে মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় রচিত ‘ম্যাজিক’ ও হুমায়ূন আহমেদ রচিত ‘পুতুল’ পদ্ম তুলে ধরা হয়েছে। ‘ম্যাজিক’ ও ‘পুতুল’ গল্পে গল্পের সব ধরনের বৈশিষ্ট্যই পরিলক্ষিত হয়। মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় রচিত ‘ম্যাজিক’ গল্পটি সাধারণের চেয়ে ভিন্ন একটি কাহিনি নিয়ে রচিত হয়েছে। আলোচ্য পঙ্কে লেখক টুটুর মায়ের সোনার চুড়ি হারিয়ে যাওয়া এবং তা জাদুকরী কৌশলে খুঁজে পাওয়ার ঘটনাটি বর্ণিত করেছেন।

অপরদিকে হুমায়ূন আহমেদ রচিত ‘পুতুল’ গল্পে একজন বালকের গাছের প্রতি ভালোবাসা এবং পিতা ও পুত্রের স্নেহের সম্পর্ক তুলে ধরা হয়েছে। আলোচ্য পদ্মের চরিত্র হিসেবে আমরা পাই রহমান সাহেব, পুতুল প্রভৃতি চরিত্র। গল্প ৰাস্তব বিষয় নিয়েও রচিত হতে পারে, আবার কাল্পনিক বিষয় নিয়েও রচিত হতে পারে। ‘ম্যাজিক’ গল্পে কল্পনার পরিচয় পাওয়া যায় এবং ‘পুতুল’ পল্পে বাস্তব বিষয়ের উপস্থিতি পরিলক্ষিত হয়।


৬ষ্ঠ শ্রেণির বাংলা ৬ষ্ঠ অধ্যায় ৩য় পরিচ্ছেদ

ম্যাজিক গল্পের মূলভাব

‘ম্যাজিক’ মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় রচিত একটি বিখ্যাত গল্প। বাংলা ভাষায় ছোটোগল্প সবচেয়ে আধুনিক গল্প এক ধরনের গদ্য রচনা, যেখানে কাহিনি ও চরিত্র থাকে। গল্পের কাহিনি সাধারণ ঘটনার চেয়ে একটু আলাদা হয়। এই কাহিনি বাস্তব জীবনে ঘটে এমন হতে পারে, আবার কাল্পনিকও হতে পারে। এদিক থেকে গল্প দুই ধরনের বাস্তবের মিল আছে এমন গল্প এবং কাল্পনিক বিষয় নিয়ে রচিত গল্প।

‘ম্যাজিক’ গল্পে দেখা যায়, টুটু পা পিছলে পড়ে গিয়ে সোমার চুড়ি ভেঙে দুটুকরো করে ফেলে। বাবাকে দেখিয়ে মা চুড়ির টুকরো দুটো বিছানার বালিশের তলায় কোথাও খুঁজে রেখেছিলেন। এখান থেকেই গন্ডগোলের সূচনা। রাখার সময় যত্নের অভাব ছিল না। কিন্তু পরে মা টুকরো দুটো বিছানা-বালিশের কোথাও আর খুঁজে পান না। এতে সবাই তাজ্জব বনে যায়। তাহলে গেল কোথায়? টুকরো দুটো কি হাওয়া হয়ে গেল? কিন্তু বাবার মনে হলো বালিশের তলায় রাখতে গিয়ে মা হয়তো টুকরো দুটো বালিশের ওয়াড়ের ভেতরে রেখে দিয়েছেন।

বাবার কাছে ব্যাপারটা ম্যাজিকের মতোই মনে হতে লাগল। এই চিন্তা থেকে বাবার হাসি পেল এবং মাকে চমকে দিয়ে বললেন, এই ঘরেই চুড়ি খুঁজে পাওয়া যাবে। বালিশের ওয়াড়ের ভেতরে খুঁজে দেখো। শেষ পর্যন্ত বাবার চিন্তাই ঠিক হলো। সেখানেই চুড়ির টুকরো পাওয়া গেল। অর্থাৎ বালিশের তলা ভেবে টুটুর মা চুড়ির টুকরোগুলো ওয়াড়ের ভেতরে ঢুকিয়ে দিয়েছিলেন) অথচ তন্ন তন্ন করে খুঁজেও না পেয়ে মনের মধ্যে জেগে উঠেছিল কত রকম সন্দেহ। তাড়াহুড়ো করতে গিয়ে এমন ম্যাজিকের ঘটনা ঘটেছে। অই যেকোনো কাজ ঠান্ডা মাথায় করা উচিত।

পুতুল গল্পের মূলভাব

‘পুতুল’ গল্পটি শিশুদের বিচিত্র ভাব নিয়ে রচিত। গল্পটি লিখেছেন খ্যাতিমান কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদ (১৯৪৮ – ২০১২)। তিনি ছোটো ছোটো বাক্যে, সহজ-সরল ভাষায় প্রচুর গল্প-উপন্যাস লিখেছেন। ছোটোদের উপযোগী তাঁর লেখা বইগুলোর মধ্যে ‘তোমাদের জন্য রূপকথা’, ‘নীল হাতি’, ‘বোতল ভূত’, ‘কানী ডাইনী’ প্রভৃতি উল্লেখযোগ্য। আলোচ্য গল্পটি হুমায়ূন আহমেদের ‘পুতুল’ নামক বই থেকে গৃহীত ।

‘পুতুল’ গল্পের মূল বিষয় প্রকৃতিপ্রেম। গল্পের প্রধান চরিত্র এগারো বছর বয়সী পুতুল। তার একাকিত্ব, বাবা-মায়ের সম্পর্ক, নিজের কল্পনার জগৎ এবং প্রকৃতির সঙ্গে তার নিবিড় সম্পর্ক এই গল্পের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। কিন্তু গল্পটির আঙ্গিক তৈরি হয়েছে গাছ কাটাকে কেন্দ্র করে। তাদের ঘরের কাছে রয়েছে বিচিত্র গাছের বাগান। বাগানের দুটি কদম ফুলের গাছ কেটে ফেলার সিদ্ধান্ত হলে পুতুলের মন খারাপ হয়। কদম ফুলের গাছগুলো শৈশব থেকেই পুতুলের সঙ্গী ও বন্ধুর মতো। এগুলো কেটে ফেলাকে কেন্দ্র করে তার মনে যে চিন্তা ও অনুভূতি তা নিয়ে বলার মতো আশেপাশে কেউ নেই।

পুতুলের মা কদম ফুলের গাছ একেবারে সহ্য করতে পারেন না। কারণ এই গাছে শুয়োপোকা জন্ম নেয়। তাই মায়ের ইচ্ছেতেই কদম ফুলের গাছ কেটে ফেলার সিদ্ধান্ত। শেষ পর্যন্ত পুতুল তার বাবা রহমান সাহেবকে জিজ্ঞেস করে, ‘গাছগুলো কাটবে কেন?’ কারণ গাছ কাটা তার পছন্দ নয়। বাৰা গাছ কাটার পক্ষে যুক্তি দিলেও পুতুলের মন থেকে বিষাদ দূর হয় না।


৬ষ্ঠ শ্রেণির বাংলা ৬ষ্ঠ অধ্যায় ৩য় পরিচ্ছেদ অধ্যায়ের কাজ

কাজ ১: ‘ম্যাজিক’ পরটি নিজের ভাষায় বলো এবং নিজের ভাষায় লেখো। [পাঠ্যবই পৃষ্ঠা ১১০]
উত্তর: পা পিছলে টুটু সোনার চুড়ি ভেঙে দু টুকরো করে ফেলে। বাবাকে দেখিয়ে মা টুকরো দুটো বিছানার বালিশের তলার কোথাও খুঁজে রেখেছিলেন। সেখানেই গোল বাঁধে। যত্ন করে রাখতে গিয়ে পরে মা বিছানা-বালিশের কোথাও আর টুকরো দুটো খুঁজে পান না। ব্যাপারটায় সবাই তাজ্জব বনে যায়।

তাহলে চুড়ির টুকরো দুটো হাওয়া হয়ে গেল নাকি? কিন্তু বাবার মনে হলো বালিশের তলায় রাখতে গিয়ে টুটুর মা আসলে বালিশের ওয়াড়ের ভেতরেই রেখে দিয়েছেন। এই চিন্তা মাথায় আসতেই বাবার হাসি পেল এবং টুটুর মাকে চমক দিয়ে বললেন, এই ঘরে বসেই চুড়ি খুঁজে দিচ্ছি; বালিশের ওয়াড়ের ভেতরটা খুঁজে দেখো। অবশেষে সেখানেই সোনার চুরির টুকরো দুটো পাওয়া গেল।

অর্থাৎ বালিশের তলা মনে করে টুটুর মা বালিশের ওয়াড়ের ভেতরে চুড়ির টুকরো দুটো চালান করে দিয়েছিলেন। অথচ সারা বেলা তন্ন তন্ন করে খুঁজতে হলো সমস্ত ঘর এবং সন্দেহ করতে হলো কতো কিছুতে। তাড়াহুড়া কিংবা অসচেতনভাবে কোনো কাজ করতে গিয়ে আমরা অস্থানে অনেক কিছু রেখে দিই। পরে তা আমাদের খুঁজে পেতে বেগ পেতে হয়, অথচ ঠাণ্ডা মাথায় তেৰে নিলে তা সহজেই পাওয়া সম্ভব। টুটুর বাবার সহজ ভাবনাটা এই গল্পে ম্যাজিকের মতো কাজ করে চুড়ির টুকরোগুলো খুঁজে পেতে সাহায্য করেছে।

কাজ ২: জীবনের সঙ্গে সম্পর্ক খুঁজি ‘ম্যাজিক’ গল্পের সাথে তোমার জীবনের বা চারপাশের কোনো মিল খুঁজে পাও কি না, কিংবা কোনো সম্পর্ক খুঁজে পাও কি না, তা নিচে লেখো। [পাঠ্যবই পৃষ্ঠা ১১১]
উত্তর: ‘ম্যাজিক’ গল্পের সাথে আমার জীবনের একটি ঘটনা মিলে যায়। ঘটনাটি হলো- সেদিন ছিল শুক্রবার। বিকালবেলা আমি ব্যাডমিন্টন খেলছিলাম ড্রইং রুমে। বাবা বসে এক কোনায় ল্যাপটপ চালিয়ে জরুরি কাজ করছিলেন। অমনি আমার ফ্লাওয়ারটি বাবার কাঁধে পড়ল। বাবা রেগে গিয়ে ফ্লাওয়ারটি খুব জোরে ডাইনিং স্পেসের দিকে ছুড়ে মারলেন।

আমি গিয়ে ওটি খুঁজতে শুরু করলাম। অনেকক্ষণ ডাইনিং টেবিলে, নিচে ও আশপাশে খুঁজলাম। কিন্তু কোথাও খুঁজে না পেয়ে বেডরুমে গিয়ে কান্না শুরু করলাম। আমার কান্না শুনে মা এগিয়ে এলেন এবং খুঁজতে লাগলেন। সম্ভাব্য সব জায়গায় খুঁজে না পেয়ে মা সরাসরি বাবাকে বকতে শুরু করলেন। মায়ের বকা শুনে আব্বু এসে খুঁজতে লাগলেন। অনেকক্ষণ খুঁজে আমরা সবাই ব্যর্থ হয়ে ঘেমে উঠেছি।

বাবা বুঝতেই পারছেন না মুহূর্তের মধ্যে এটি কোথায় হাওয়া হয়ে গেল। বাবা ও মায়ের কপালে দুশ্চিন্তার ছাপ। কী হতে পারে বা কোথায় হারিয়ে গেল এটি তা নিয়ে খুবই উদ্বিগ্ন। বড় আপা এতক্ষণ পড়ছিল আর আইসক্রিম খাচ্ছিল। আইসক্রিমের কাঠি ফেলতে গিয়ে ময়লার ঝুড়িতে দেখতে পেল আমার ফ্লাওয়ারটি এমনভাবে পড়ে আছে যা বাইরে থেকে হঠাৎ বোঝা যায় না। সকলের ঘাম ঝরিয়ে অবশেষে এটি ময়লার ঝুড়িতে আবিষ্কার করা হলো। এই ঘটনাটির ‘ম্যাজিক’ গল্পের সাথে কিছুটা সাদৃশ্য রয়েছে।

কাজ ৩: বলি ও লিখি- ‘পুতুল’ গল্পটি নিজের ভাষায় বলো এবং নিজের ভাষায় লেখো। [পাঠ্যবই পৃষ্ঠা ১১৫]
উত্তর: পুতুলের বয়স এগারো বছর। তাদের বাড়িতে একটি বাগান আছে। ঘর থেকে বাগান দেখা যায়। বাগানটা পুতুলের খুবই প্রিয়। বাগানে তিনটি বিরাট বড়ো গাছ আছে। একটি শিরীষ গাছ, বাকি দুটি কদম ফুলের গাছগুলো পুতুলের খুবই প্রিয়। পুতুলের আর কোনো ভাই-বোন নেই। সে একা, নিঃসঙ্গ। তার একাকিত্বের কারণে গাছগুলোর সঙ্গে নিবিড় সম্পর্ক গড়ে ওঠে। কিন্তু তার মা গাছগুলো পছন্দ করেন না। কদম ফুলের গাছে প্রচুর শুয়োপোকা হয়।

শুয়োপোকা পুতুলের মা জেসমিনের খুবই অপছন্দ। এ কারণে জেসমিন প্রতিবছরই ভাবেন, গাছগুলো কেটে ফেলবেন। কিন্তু পরে আর কাটা হয় না। কদিন আগে জেসমিন বজলু নামের একজন লোককে ডেকে আনলেন। লোকটির মুখে বসন্তের দাগ। সে নানা কায়দা কানুন করে গাছ মেপে চলে গেল। সোমবারে এসে গাছ কাটবে। এই কারণে পুতুলের মন খারাপ। গাছগুলোর প্রতি তার ভীষণ মায়া। সময় পেলেই সে গাছে হাত বুলিয়ে দেয়।

আজকে হাত বোলানোর সময় লক্ষ করল, তার বাবাও বাগানে। দেখে মনে হচ্ছে, বাবা-মায়ের মধ্যে ঝগড়া হয়েছে। পুতুল বড় শিরীষ গাছটির কাছে যাওয়ার সময় বাবার রাগ বোঝার চেষ্টা করল। পুতুলের বাবা রহমান সাহেব পুতুলকে শিরীষ গাছের দিকে যেতে দেখলেন। রহমান সাহেব জানেন এটা পুতুলের প্রিয় জায়গা। বাবা পুতুলকে ডাকলেন। পুতুল ভয়ে ভয়ে বাবার দিকে যাচ্ছিল। তিনি লক্ষ করলেন শীতের সকালেও পুতুল খালি পায়ে খালি গায়ে বাগানে হাঁটাহাঁটি করছে। বাবার রাগ হলো। কিন্তু তিনি কিছুই বললেন না।

এমনিতেই পুতুল খুব নিঃসঙ্গ। পুতুলকে আরও সময় দেওয়া উচিত। কিন্তু তিনি সময় দিতে পারছেন না। তাঁর শৈশব এত নিঃসঙ্গ কাটেনি। একান্নবর্তী পরিবারে তিনি বড়ো হয়েছেন। নিজের ভাই-বোন ছাড়াও চাচাতো, ফুফাতো ভাই-বোনের অভাব ছিল না। রহমান সাহেব জানতে চাইলেন, শিরীষ গাছের কাছে পুতুল কী করে? পুতুল কিছুই বলে না। বাবা জানেন ছোটোদের গোপন কিছু জায়গা থাকে। ছোটবেলায় তারও গোপন জায়গা ছিল।

বাবার ইচ্ছা হলো পুতুলকে কাছে ডেকে মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে। পুতুল অসুস্থ। রহমান সাহেব পুতুলের শরীরের অবস্থা জানতে চাইলেন। পুতুল আজকে খুবই ভালো আছে। পুতুল বাবার কাছে জানতে চাইল, গাছগুলো কাটতে হবে কেন? গাছ কাটা পুতুলের কাছে পছন্দের নয়। বাবা বললেন, শুয়োপোকার কারণে গাছগুলো কেটে ফেলতে হবে। তাছাড়া গাছের জন্য বাড়িতে পর্যাপ্ত আলো-বাতাসও আসে না।

কাজ ৪: ‘পুতুল’ গল্পের সাথে তোমার জীবনের বা চারপাশের কোনো মিল খুঁজে পাও কি না কিংবা কোনো সম্পর্ক খুঁজে পাও কি না, নিচে লেখো। [পাঠ্যবই পৃষ্ঠা ১১৬]
উত্তর: সৈকত ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ে। সে দ্বিতীয় শ্রেণিতে থাকার সময় তার বড়ো ভাই রুবেল কবুতর পোষা শুরু করে। কবুতর ছাদ নোংরা করে ফেলত এবং ছাদে কাপড় শুকানো যেত না। কবুতর কাপড় ময়লা করে ফেলত। এই কারণে সৈকতের মা কবুতর বিক্রি করে ফেলতে চাইতেন। কিন্তু ছেলের আগ্রহ দেখে মায়া লাগে। তাই কবুতরগুলো বিক্রি করেন না। কয়েক মাস আগে রুবেল পড়াশোনার জন্য ঢাকায় চলে আসে।

সেই থেকে কবুতরগুলোর দেখাশোনা সৈকত করে। সে সকাল-বিকাল কবুতরকে খাবার দেয়। কবুতরের ঘর পরিষ্কার করে। পানি দেয়। মাঝে মাঝে কবুতর হাতে নিয়ে বিড়বিড় করে কী সব যেন বলে। কিছুদিন আগে মা আবারও কবুতর বিক্রি করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। এক লোককে কবুতর দেখানো হলে লোকটি বলল, সব কবুতরেই ডিম-বাচ্চা আছে। এখন নিলে বাচ্চা মারা যাবে। ডিম নষ্ট হয়ে যাবে। বাচ্চা বড়ো হলে আমি কবুতর নিয়ে যাব। সেই থেকে সৈকতের মন খারাপ।

গত বৃহস্পতিবার সৈকতের বাবা ঢাকা থেকে এলে সৈকত বাবাকে জিজ্ঞেস করে কবুতর বিক্রি করতে হবে কেন? বাবা বলল, প্রথমত কবুতরগুলো ছাদ ময়লা করে। ছাদে কাপড় শুকাতে দেওয়া যায় না। তাছাড়া এখন তোমার ভাইও ঢাকায় চলে গেছে। কবুতরের ঠিকমতো যত্ন হচ্ছে না। তুমিও সারা দিন স্কুলে থাকো। তাই কবুতরগুলো বিক্রি করে দেওয়া দরকার। বাবার কথায় যুক্তি থাকলেও সৈকতের মন খারাপ হয়ে যায়।

কাজ ৫: গল্প লিখি- নিচের ফাঁকা আয়গায় বানিয়ে বানিয়ে তুমি একটি গল্প লেখো। লেখার সময়ে গল্পের বৈশিষ্ট্যগুলো খেয়াল রেখো। পল্পটিরও একটি নাম দাও। [পাঠ্যবই পৃষ্ঠা ১১৮]
উত্তর: মায়া সৌরভ একদিন স্কুল থেকে আসার সময় পাখির ছানার কিচিরমিচির আওয়াজ শুনল। সে প্রথমে খুব একটা গুরুত্ব দেয়নি। একটু পর আবারও আওয়াজটা শুনল। রাতে ঝড় এসেছিল। আবারও ঝড়ের আশঙ্কায় দ্বিতীয় পিরিয়ডের সময় স্কুল ছুটি হয়ে। বাড়ি ফেরার তাড়া। তার কাছে মনে হলো আওয়াজটা কাছ থেকে আসছে। সে বাড়ির নিচে একটা ভাড়া বাসা দেখতে পেল। কৌতূহলী হয়ে সে পাখির বাচ্চাটা খুঁজতে লাগল। পেয়েও গেল।

এক সঙ্গে তিনটি শালিকের বাচ্চা। ঝড়ের কবলে পড়ে দুটি আগেই মারা গিয়েছে। বাকিটাও মারা যাওয়ার অবস্থায়। সৌরভের মায়া লেগে গেল। সে বাচ্চাটাকে হাতে নিয়ে দ্রুত বাড়ি চলে এলো। মাকে বলল, পাখির বাসাটা ভেঙে গিয়েছে। যত্ন না নিলে বাচ্চাটা মারা যাবে। সৌরভ ভয়ে ভয়ে ছিল। সে ভেবেছিল মা বাচ্চাটা দেখে খুব বকে দেবে। মা আসল ঘটনা বুঝতে পেরে কিছুই বলেনি। সৌরভ কাপড় পাল্টে দ্রুত দাদির ঘরে গেল। বাচ্চাটা শীতে কাঁপছিল। দাদির ঘরে মাটির হাড়িতে গরম ছাই থাকে। ওটার পাশে বাচ্চাটা রেখে দিল।

সৌরভ বুঝতে পারল, বাচ্চাটা একটু আরাম পাচ্ছে। সে দ্রুত অল্প কয়টা ভাত খাওয়ালো আর ড্রপ দিয়ে পানি পান করাল। পর বাচ্চাটাকে গরম জায়গায় রেখে দিল। সে যাত্রায় বাচ্চাটা বেঁচে যায়। সৌরভ অনেক যত্নে বাচ্চাটা বড় করে তোলে। বাচ্চা দিন দিন বড় হতে থাকে। শরীর পশমে ভরে যায়। মাঝে মাঝে একটু একটু উড়াল দিতে পারে। এখন আর ধরে খাইয়ে দিতে হয় না। খাবার সামনে রাখলে নিজে নিজেই খেতে পারে। এর কিছু দিন পর বাচ্চাটা উড়াল দিতে শেখে। নিজে নিজে খাবার খেতে শেখে। বাচ্চাটা এখন পূর্ণ শালিকে পরিণত হয়েছে। সৌরভ ভেবেছিল বড়ো হয়ে পাখিটা চলে যাবে। কিন্তু পাখিটা বড়ো হয়েও তাকে ছেড়ে যায়নি। সব সময় সৌরভের কাছেই থাকে।


৬ষ্ঠ শ্রেণির বাংলা ৬ষ্ঠ অধ্যায় ৩য় পরিচ্ছেদ অতিরিক্ত কাজ

কাজ ১: গঞ্জের বৈশিষ্ট্যগুলো ভালোভাবে জেনে নাও। এবার নিজে একটি গল্প লেখো। গল্পের একটি শিরোনাম দাও।
উত্তর: নতুন জামা আজ সকালে ঘুম থেকে উঠে রাহেলা তার মা নছিরনের পিছু নিয়েছে। ভয় তার একটাই, মা না জানি কখন কাজে বের হয়ে যায়। দাবি তার একটাই, পাশের বাসায় থাকা ওরই বয়সী রিতুর নতুন পোশাকটির মতো একটি পোশাক। এ কারণে নছিরনের পিছু পিছু ঘুরতে ঘুরতে রাহেলা বলতে থাকে ‘হেই জামাটা আমারে আইন্যা দ্যাও।’ মা তার এসব কথা শুনতে শুনতে একপর্যায়ে খুব রেগে ওঠে।

মায়ের এমন ধমক শুনে রাহেলার কান্না আরও বেড়ে যায়। আজ এমনিতেই নছিরনের মেজাজটা ভালো নেই। তার ওপরে মেয়ের এই আবদার। নছিরন তার মালিকের বাসায় কাজ করে আর ভাবে কীভাবে রাহেলাকে নতুন জামা কিনে দেওয়া যায়। নছিরন এই বাড়িতে কাজ করে। এ বাসায় সে দুবেলা খায় আর হাতে পায় দুই হাজার টাকা। সেই টাকায় চলে ঘর ভাড়া আর রাহেলার খরচ। এ থেকে কোনোভাবেই টাকা বাঁচানো সম্ভব নয়। ঘরের মেঝে মুছতে মুছতে হঠাৎ করেই নছিরন উঠে এপিয়ে যায় বাড়ির মালিকের স্ত্রী আফসানা চৌধুরীর কাছে। বলে, ‘আফা, একটা কতা কইতাম।’ আফসানা বলেন, ‘বল, কী বলবি।’

নছিরন বলে, ‘আফা, মুই দুপুরের খাওন খাইতাম না। হের বদলে মাসে পাঁচশ টাকা দিতে হইব। মুই ৰাড়ি থেইক্যা খাইয়া আমুনে।’ সেই থেকে নছিরন সকাল ও দুপুরে খায় না, শুধু রাতে খায়। এর বিনিময়ে নছিরন পাবে মাসে পাঁচশত টাকা বেশি। নছিরন বাড়ি গেলেই রাহেলা বলে, ‘আম্মা, আর কয়দিন পরে মোরে জামা দিবা?’ নছিরন মেয়েকে বোঝাতে থাকে, আর তৌ কয়ডা মাত্র দিন। আইন্যা দিমু নে।’ নছিরন দেখতে পায় রাহেলা নতুন জামা পাবে বলে খুব খুশি। রাহেলা তার সাথিদের বলে, জানস, মা মোরে নতুন জামা আইন্যা দিব।’ নছিরনও দিন পুনতে থাকে।

এইভাবে দিনে একবার মাত্র খাওয়ার ফলে ক্রমেই তার শরীর দুর্বল হতে শুরু করে। আর মাত্র কয়টা দিন। তাহলেই দুই মাস হবে। দুই মাসে এক হাজার টাকা বেশি পাবে নছিরন। সেই টাকা দিয়ে সে কিনবে মেয়ে রাহেলার জন্য নতুন জামা। আজ রাহেলার খুব খুশির দিন। তার মা নছিরন আজ তার জন্য নতুন জামা আনবে। নছিরন একেবারে শুকিয়ে গেছে। তবুও তাকে চলতে হচ্ছে। আফসানা চৌধুরীর কাছে দুমাসের এক বেলা খাবারের পরিবর্তে জমা রাখা এক হাজার টাকা দিয়ে পাশের ফ্ল্যাটের সাহেবের মেয়ের মতো জামা কেনে। দোকান থেকে বের হয়ে হাঁটতে থাকে নছিরন।

হঠাৎ করেই মাথা ঘুরে পড়ে যায়। কিছুক্ষণ পর আবার চলতে শুরু করে। বাড়ির সামনে গিয়ে দেখে রাহেলা মায়ের জন্য অপেক্ষা করছে। মাকে দেখেই রাহেলা দৌড়ে মায়ের কাছে যায়। বলে, মা মোর জামা কো।’ ঢুলতে ঢুলতে নছিরন জামাটি বের করে দেয় রাহেলার হাতে। জামাটি পেয়ে রাহেলা মায়ের দিকে চেয়ে এক চিলতে হাসি দিয়ে ওঠে। রাহেলার সেই হাসি দেখে নছিরন ভুলে যায় তার গত দুই মাসের অনাহারের কথা। নছিরনও হেসে ওঠে মেয়ের সঙ্গে।

কাজ ২: পুতুল ও তার বাবা শৈশবের মধ্যে পার্থক্য কেমন?
উত্তর: পুতুলের শৈশব
পুতুল ভীষণ নিঃসঙ্গ। তার খেলার কোনো সঙ্গী নেই। সময় কাটানোর মতো কোনো বন্ধু নেই। বাবাও সারা দিন ব্যস্ত থাকেন, পুতুল কী করে না করে খবর রাখতে পারেন না। পুতুল খুবই একা।

পুতুলের বাবার শৈশৰ
পুতুলের বাবার শৈশব পুতুলের মতো নিঃসঙ্গ ছিল না। তিনি অনেক ভাই-বোনের মধ্যে বড়ো হয়েছেন। তাঁদের বাড়িটা ছিল হৈ চৈ হুল্লোড়ের বাড়ি। নিজের ভাই-বোন ছাড়াও চাচাতো, ফুফাতো ভাই- বোনসহ পাড়ার সব ছেলে পেলে মিলে সারা দিন চিৎকার চেঁচামেচি হৈ চৈ করে কাটাত।


৬ষ্ঠ শ্রেণির বাংলা ৬ষ্ঠ অধ্যায় ৩য় পরিচ্ছেদ কুইজ প্রশ্ন

প্রশ্ন ১। মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় কী লিখেছেন?
উত্তর: মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় অনেক গল্প ও উপন্যাস লিখেছেন।

প্রশ্ন ২। ‘পদ্মানদীর মাঝি’ বইটি কার লেখা?
উত্তর: ‘পদ্মানদীর মাঝি’ বইটি মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের লেখা।

প্রশ্ন ৩। ‘পুতুলনাচের ইতিকথা’, ‘প্রাগৈতিহাসিক’ কার লেখা?
উত্তর: ‘পুতুলনাচের ইতিকথা’, ‘প্রাগৈতিহাসিক’ মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের লেখা।

প্রশ্ন ৪। ‘ম্যাজিক’ পল্পটির লেখক কে?
উত্তর: ‘ম্যাজিক’ গল্পটির লেখক মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়।

প্রশ্ন ৫। লেখক ভোরে উঠে কোথায় গিয়েছিলেন?
উত্তর: লেখক ভোরে উঠে বেড়াতে গিয়েছিলেন।

প্রশ্ন ৬। ছেলেমেয়েদের শোবার ঘর আর রান্নাঘরের মাঝখানের প্যাসেজে সবাই কী করছিল?
উত্তর: ছেলেমেয়েদের শোবার ঘর আর রান্নাঘরের মাঝখানের প্যাসেজে সবাই জলখাবার খাচ্ছিল।

প্রশ্ন ৭। সোনার চুড়িটা ভেঙে দু টুকরো করেছে কে?
উত্তর: সোনার চুড়িটা ভেঙে দু টুকরো করেছে টুটু।

প্রশ্ন ৮। টুটু সোনার চুড়িটা কীভাবে ভেঙেছিল?
উত্তর: টুটু সোনার চুড়িটা পা পিছলে পড়ে গিয়ে ভেঙেছিল।

প্রশ্ন ৯। পা পিছলে পড়ে গিয়ে কে ব্যথা পেয়েছিল?
উত্তর: পা পিছলে পড়ে গিয়ে টুটু ব্যথা পেয়েছিল।

প্রশ্ন ১০। টুটুর মা টুটুকে কী পরতে দিয়েছিলেন?
উত্তর: টুটুর মা টুটুকে সোনার চুড়ি পরতে দিয়েছিলেন।

প্রশ্ন ১১। সোনার চুড়ি ভেঙে করা টুকরো হয়েছে?
উত্তর: সোনার চুড়ি ভেঙে দুই টুকরো হয়েছে।

প্রশ্ন ১২। টুটুর মা সোনার চুড়ির টুকরো দুটো আবার কোথায় খুঁজে রাখলেন?
উত্তর: টুটুর মা সোনার চুড়ির টুকরো দুটো আবার বালিশের তলায় গুঁজে রাখলেন।

প্রশ্ন ১৩। দামি জিনিস হারানোর পুরনো অভিজ্ঞতা আছে কার?
উত্তর: দামি জিনিস হারানোর পুরনো অভিজ্ঞতা আছে টুটুর মায়ের।

প্রশ্ন ১৪। চুড়ির টুকরো দুটো তুলে রাখতে গিয়ে টুটুর মা প্রথমে কোথায় হাতড়ালেন?
উত্তর: চুড়ির টুকরো দুটো তুলে রাখতে গিয়ে টুটুর মা প্রথমে বালিশের তলায় হাতড়ালেন।

প্রশ্ন ১৫। চুড়ির টুকরো খুঁজে না পেয়ে টুটুর মা কীভাবে চেয়ে রইলেন?
উত্তর: চুড়ির টুকরো খুঁজে না পেয়ে টুটুর মা বিস্ময়ে হতবাক হয়ে চেয়ে রইলেন।

প্রশ্ন ১৬। বিছানার চাদর তুলে ঝেড়ে-ঝুড়ে টুটুর মা কী খুঁজলেন?
উত্তর: বিছানার চাদর তুলে ঝেড়ে-ঝুড়ে টুটুর মা সোনার চুড়ির ভাঙা টুকরো দুটো খুঁজলেন।

প্রশ্ন ১৭। তুমি নিশ্চয় তামাশা করছ।’- এটি কার উক্তি?
উত্তর: ‘তুমি নিশ্চয় তামাশা করছ।’- এটি টুটুর মায়ের উক্তি।

প্রশ্ন ১৮। বিছানার এক মাথায় পাশাপাশি কয়টি করে বালিশ?
উত্তর: বিছানার এক মাথায় পাশাপাশি দুটো করে বালিশ।

প্রশ্ন ১৯। টুটুর মা কোথায় খুঁজলে সোনার চুড়ির টুকরো দুটো পেয়ে যাবে?
উত্তর: টুটুর মা বালিশের ওয়াড়ের ভেতর খুঁজলে সোনার চুড়ির টুকরো দুটো পেয়ে যাবে।

প্রশ্ন ২০। তন্ন তন্ন করে সবকিছু খোঁজার সময় কোনটি খোঁজার কথা খেয়াল হয়নি?
উত্তর: তন্ন তন্ন করে সবকিছু খোঁজার সময় বালিশের ওয়াড় খোঁজার কথা খেয়াল হয়নি।

প্রশ্ন ২১। ‘তোমাদের জন্য রূপকথা’ বইটির লেখক কে?
উত্তর: ‘তোমাদের জন্য রূপকথা’ বইটির লেখক হুমায়ূন আহমেদ।

প্রশ্ন ২২। ‘বোতল ভূত’, ‘কানী ডাইনী’ কার লেখা বই?
উত্তর: ‘বোতল ভূত’’, ‘কানী ডাইনী’ হুমায়ূন আহমেদের লেখা বই।

প্রশ্ন ২৩। ‘পুতুল’ গল্পটি হুমায়ূন আহমেদের কোন বই থেকে নেওয়া?
উত্তর: ‘পুতুল’ গল্পটি হুমায়ূন আহমেদের ‘পুতুল’ নামক বই থেকে নেওয়া।

প্রশ্ন ২৪। পুতুলদের বাগানে কয়টি বড়ো বড়ো গাছ আছে?
উত্তর: পুতুলদের বাগানে তিনটি বড়ো বড়ো গাছ আছে।

প্রশ্ন ২৫। পুতুলদের বাগানের বড়ো গাছ তিনটি কী কী?
উত্তর: পুতুলদের বাগানের বড়ো গাছ তিনটির একটি রেনটি ও দুটি কদম ফুলের গাছ।

প্রশ্ন ২৬। কোন গাছে বর্ষাকালে সোনার বলের মতো ফুল ফোটে?
উত্তর: কদম ফুলের পাছে বর্ষাকালে সোনার বলের মতো ফুল ফোটে।

প্রশ্ন ২৭। পুতুলের মায়ের নাম কী?
উত্তর: পুতুলের মায়ের নাম জেসমিন।

প্রশ্ন ২৮। পুতুলের মা কদম ফুলের গাছ দুটি সহ্য করতে পারেন না কেন?
উত্তর: কদম ফুলের গাছে পুঁয়োপোকা হয় বলে পুতুলের মা কদম ফুলের গাছ দুটি সহ্য করতে পারেন না।

প্রশ্ন ২৯। কী দেখলে পুতুলের মায়ের বমি পেয়ে যায়?
উত্তর: শুয়োপোকা দেখলে পুতুলের মায়ের বমি পেয়ে যায়।

প্রশ্ন ৩০। পুতুলের মা কদম ফুলের গাছ কাটার জন্য যে লোক ঠিক করেছেন তার নাম কী?
উত্তর: পুতুলের মা কদম ফুলের গাছ কাটার জন্য যে লোক ঠিক করেছেন তার নাম বজলু মিয়া।

প্রশ্ন ৩১। বজলু মিয়ার মুখে কীসের দাগ?
উত্তর: বজলু মিয়ার মুখে বসন্তের দাগ।

প্রশ্ন ৩২। খুব রেগে গেলে গম্ভীর হয়ে যান কে?
উত্তর: খুব রেগে গেলে গম্ভীর হয়ে যান পুতুলের বাবা রহমান সাহেব।

প্রশ্ন ৩৩। পুতুলের বয়স কত?
উত্তর: পুতুলের বয়স এগারো বছর।

প্রশ্ন ৩৪। রহমান সাহেব রোদে পিঠ দিয়ে কোথায় বসলেন?
উত্তর: রহমান সাহেব রোদে পিঠ দিয়ে ঘাসে বসলেন।

প্রশ্ন ৩৫। হাসিমুখের একটি ছেলেকে ধমক দিতে কার মায়া লাগে?
উত্তর: হাসিমুখের একটি ছেলেকে ধমক দিতে রহমান সাহেবের মায়া লাগে।

প্রশ্ন ৩৬। রেশমের মতো মাথা ভরতি চুল কার?
উত্তর: রেশমের মতো মাথা-ভরতি চুল পুতুলের।

প্রশ্ন ৩৭। গাছগুলোর জন্য ঘরে কী ঢুকতে পারে না?
উত্তর: গাছগুলোর জন্য ঘরে আলো-হাওয়া ঢুকতে পারে না।

প্রশ্ন ৩৮। এক ধরনের গদ্য রচনা, কাহিনি ও চরিত্র থাকে এটি কীসের বৈশিষ্ট্য?
উত্তর: এক ধরনের গদ্য রচনা, কাহিনি ও চরিত্র থাকে—’— এটি গল্পের বৈশিষ্ট্য।

প্রশ্ন ৩৯। যাঁরা গল্প লেখেন, তাঁদেরকে কী বলে?
উত্তর: যাঁরা গল্প লেখেন, তাঁদেরকে গল্পকার বলে।

প্রশ্ন ৪০। রহমান সাহেব ব্যস্ততার জন্য কার খবর রাখতে পারেন না?
উত্তর: রহমান সাহেব ব্যস্ততার জন্য তাঁর নিজের ছেলে পুতুলের খবর রাখতে পারেন না।


৬ষ্ঠ শ্রেণির বাংলা ৬ষ্ঠ অধ্যায় ৩য় পরিচ্ছেদ সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন

প্রশ্ন ১। ‘ম্যাজিক’ গল্পে ‘ম্যাজিক’ মূলত কী?
উত্তর: টুটুর মা সোনার চুড়ি বালিশের নিচে রাখতে গিয়ে ভুলবশত ওয়াড়ের ভেতর রেখে দিয়েছিলেন। পরে খুঁজতে গিয়ে আর খুঁজে পান না বলে একটা রহস্যের সৃষ্টি হয়। গল্পে এটাকেই ম্যাজিক হিসেবে বলা হয়েছে।

প্রশ্ন ২। ‘ম্যাজিক’ গল্পে রহস্যময় ঘটনাটি কীভাবে ঘটেছে?
উত্তর: ‘ম্যাজিক’ গল্পে টুটু পিছলে পড়ে মায়ের চুড়ি ভেঙে দু টুকরো করে ফেলার পর তার মা টুকরো দুটি বালিশের নিচে নিয়ে রাখেন। কিছুক্ষণ পর আবার সেটা খুঁজতে গিয়ে তিনি অবাক হয়ে যান। পুরো ঘর তন্ন তন্ন করে খুঁজেও তিনি চুড়ির টুকরো দুটি পান না। পরে টুটুর বাবার হঠাৎ মনে পড়ে টুটুর মা ভুলবশত চুড়ির টুকরো দুটো বালিশের নিচে রাখতে গিয়ে হয়তো বালিশের ওয়াড়ের ভেতর রেখে দিয়েছেন। সত্যিই সেটাই ঘটে। একটু ভুলের জন্য পুরো বিষয়টাকে একটা ম্যাজিকের মতো মনে হয়েছিল।

প্রশ্ন ৩। এই লেখা থেকে ‘ম্যাজিক’ সম্পর্কে কী বুঝতে পারলে?
উত্তর: এই লেখা থেকে বুঝতে পারলাম, ম্যাজিক বলতে আসলে অলৌকিক কিছু নয়। মানুষ ম্যাজিকের সমাধান কঠিন দিকে খুঁজতে যায় বলেই সেটাকে ম্যাজিক মনে হয়। অথচ একেবারে সহজ দিকে খুঁজলেও হয়তো এর সমাধান পেয়ে যেত।

প্রশ্ন ৪। গল্প বলতে কী বোঝ? তুমি কি গল্পের বই পড়তে পছন্দ করো?
উত্তর: গল্প বলতে বুঝি, কোনো কল্পকাহিনি বা বাস্তব ঘটনার খুব সুন্দর বর্ণনা, যা মানুষকে হাসায়, কাঁদায়, আনন্দ দেয়। গল্প পছন্দ করে না এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া হয়তো মুশকিল। আমি আমার অবসরে গল্প পড়ি. খুব। বাংলাদেশের বড়ো বড়ো লেখকের গল্পের বই আমার ব্যক্তিগত লাইব্রেরিতে সাজানো আছে। আমি নিজে গল্প পড়ার পাশাপাশি আমার সহপাঠী বন্ধুদেরও গল্প পড়ার প্রতি উৎসাহিত করি।

প্রশ্ন ৫। পুতুলদের বাগানটি কেমন?
উত্তর: পুতুলদের বাগানটি খুব সুন্দর। শুধু তাকিয়ে থাকতে ইচ্ছে করে। তিনটা বিশাল বিশাল বড়ো গাছ আছে। একটি রেনট্রি গাছ, বাকি দুটি কদম ফুলের গাছ। পাশপাশি কদম ফুলের গাছ দুটি যেন যমজ বোন। বর্ষাকালে গাছ দুটিতে সোনার বলের মতো অদ্ভুত ফুল ফোটে।

প্রশ্ন ৬। জেসমিন কদম ফুলের গাছ দুটি সহ্য করতে পারেন না কেন?
উত্তর: কদম ফুলের গাছে খুব শুঁয়োপোকা হয়। শুঁয়োপোকা দেখলেই জেসমিনের বমি পেয়ে যায়। এজন্যই তিনি কদম ফুলের গাছ দুটি একেবারেই সহ্য করতে পারেন না। তিনি প্রতি শীতকালেই একবার করে বলেন গাছগুলো কেটে ফেলা দরকার। শেষ পর্যন্ত কেন যেন কাটা হয়। না।

প্রশ্ন ৭। পুতুলের মন খারাপ কেন?
উত্তর: এই শীতে ঠিক করা হয়েছে বড়ো গাছগুলো সব কেটে ফেলা হবে। এজন্য বজলু মিয়া বলে এক লোককে ঠিক করা হয়েছে। বজলু মিয়া গাছগুলো দেখে দড়ি দিয়ে মাপ নিয়ে গেছে। আগামী সোমবার লোকজন নিয়ে এসে গাছ কেটে ফেলবে। এ কারণে পুতুলের মন খারাপ।

প্রশ্ন ৮। পুতুল বাগানে গিয়ে কী করে?
উত্তর: পুতুল বাগানে এসে গাছের গায়ে হাত বুলিয়ে দেয়। ফিসফিস করে কথা বলে। হয়তো সান্ত্বনার কোনো কথা হবে। পুতুল রেনটি গাছের নিচে বসে বসে ভাবে। এটা তার গোপন জায়গা।

প্রশ্ন ৯। ‘পুতুল’ গল্পে গাছ কেটে ফেলা সম্পর্কে তোমার মতামত কী?
উত্তর: গাছ আমাদের বন্ধু। গাছপালা পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করে। সুতরাং বিনা কারণে গাছ কাটা কোনোভাবেই কাম্য নয়। তবে যদি কোনো কারণে একান্তই গাছ কেটে ফেলতে হয় সে ক্ষেত্রে একটি গাছের বদলে দুটি গাছ রোপণ করতে হবে।

প্রশ্ন ১০। গাছ কাটার পক্ষে ও বিপক্ষে তোমার মতামত দাও।
উত্তর: পক্ষে
১. অনেক সময় আগাছা জন্মে অন্য গাছের সৌন্দর্য নষ্ট করে।
২. বাড়িতে পর্যাপ্ত আলো-বাতাস ঢুকতে বাধা দেয়।
৩. পোকা-মাকড় বাসা বাঁধে।
৪. ঝড়-তুফানে ভেঙে পড়ে দুর্ঘটনার আশঙ্কা থাকে।

বিপক্ষে:
১. গাছ আমাদের বন্ধু।
২. গাছ পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করে।
৩. গাছ আমাদের অক্সিজেন দেয়।
৪. গাছ ফুল দেয়, ফল দেয়, ছায়া দেয়।


আরও দেখুন: ৬ষ্ঠ শ্রেণির বাংলা ৪র্থ অধ্যায় – চারপাশের লেখার সাথে পরিচিত হই
আরও দেখুন: ৬ষ্ঠ শ্রেণির বাংলা ৫ম অধ্যায় ১ম পরিচ্ছেদ – প্রায়োগিক লেখা
আরও দেখুন: ৬ষ্ঠ শ্রেণির বাংলা ৫ম অধ্যায় ২য় পরিচ্ছেদ – বিবরণমূলক লেখা
আরও দেখুন: ৬ষ্ঠ শ্রেণির বাংলা ৫ম অধ্যায় ৩য় পরিচ্ছেদ – তথ্যমূলক লেখা
আরও দেখুন: ৬ষ্ঠ শ্রেণির বাংলা ৫ম অধ্যায় ৪র্থ পরিচ্ছেদ – বিশ্লেষণমূলক লেখা
আরও দেখুন: ৬ষ্ঠ শ্রেণির বাংলা ৫ম অধ্যায় ৫ম পরিচ্ছেদ – কল্পনানির্ভর লেখা
আরও দেখুন: ৬ষ্ঠ শ্রেণির বাংলা ৬ষ্ঠ অধ্যায় ১ম পরিচ্ছেদ – কবিতা
আরও দেখুন: ৬ষ্ঠ শ্রেণির বাংলা ৬ষ্ঠ অধ্যায় ২য় পরিচ্ছেদ – গান


আশাকরি “৬ষ্ঠ শ্রেণির বাংলা ৬ষ্ঠ অধ্যায় ৩য় পরিচ্ছেদ প্রশ্ন উত্তর” আর্টিকেল টি আপনাদের ভালো লেগেছে। আমাদের কোন আপডেট মিস না করতে ফলো করতে পারেন আমাদের ফেসবুক পেজ, এবং লাইভ ক্লাস করতে সাবক্রাইব করতে পারেন আমাদের ইউটিউব চ্যানেল।