|

৬ষ্ঠ শ্রেণির বাংলা ৬ষ্ঠ অধ্যায় ১ম পরিচ্ছেদ – কবিতা

৬ষ্ঠ শ্রেণির বাংলা ৬ষ্ঠ অধ্যায় ১ম পরিচ্ছেদ: মনের ভাব সুন্দর ভাষায় ছোটো ছোটো বাক্যে যখন প্রকাশিত হয় তখন তা হয় কবিতা। কবিতার ভাষা হয় পদ্য। কবিতার অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো পর পর দুই লাইনের শেষে মিল-শব্দ থাকা। কবিতার বিষয় হতে পারে বৈচিত্র্য। কাজী নজরুল ইসলাম রচিত ‘আমি সাগর পাড়ি দেবো’ কবিতায় কৰি নিজের মনের ইচ্ছা সুন্দর ভাষায় ব্যক্ত করেছেন। এই কবিতায় কবি সওদাগর হয়ে দেশ-বিদেশে ঘুরে বেড়ানো, বিভিন্ন দেশের সাথে পারস্পরিক সম্পর্ক স্থাপন ও পণ্য বিনিময়, বাধা-বিপত্তির ক্ষেত্রে সাহসী পদক্ষেপ গ্রহণ এবং নিজের দেশমাতৃকার প্রতি অগাধ ভালোবাসা প্রকাশ করেছেন। এই কবিতায় পর পর দুই লাইনের শেষে মিল-শব্দ রয়েছে। যেমন: সওদাগর-মধুকর, ঘাটে হাটে, তুলে-দুলে ইত্যাদি।

কবিতার বৈচিত্র্য বিষয় হিসেবে পল্লিকবি জসীমউদ্দীন ‘আমার বাড়ি’ কবিতায় পল্লিপ্রকৃতির ও জীবনের পরিচয় তুলে ধরেছেন। এক্ষেত্রে তিনি কবিতায় ছন্দ মেলাতে গিয়ে শব্দের চেহারায় পরিবর্তন ঘটিয়েছেন। যেমন: যেয়ো হয়েছে যাইও, ভ্রমর হয়েছে ভোমর, পিঁড়ি হয়েছে পিঁড়ে, শুয়ে থেকো হয়েছে শুয়ো ইত্যাদি। এই কবিতায়ও মিল-শব্দ রয়েছে। কবিতায় পল্লিপ্রকৃতি হিসেবে আম, কাঁঠাল, গাই, কলা, ধান, ডালিম প্রভৃতি ব্যবহার করা হয়েছে। এই কবিতায় কবি বন্ধুকে তাঁর বাড়িতে বেড়াতে আসার জন্য নিমন্ত্রণ জানিয়েছেন।

শামসুর রাহমান রচিত ‘বাঁচতে দাও’ কবিতাটিতে প্রকৃতির বিভিন্ন অনুষঙ্গ হিসেবে গোলাপ ফুল, সোনালি চিল, জোনাকি পোকা, ঘুঘু ইত্যাদি ব্যবহৃত হয়েছে। কবিতা যে হাততালি দিয়ে পড়া যায় তার একটি উজ্জ্বল নিদর্শন হলো বাঁচতে দাও কবিতা। যেমন: /এই তো দ্যাখো/ ফুলবাগানে / গোলাপ ফোটে/ ফুটতে দাও। এভাবে কবিতায় বৈশিষ্ট্য তুলে ধরা হয়েছে আলোচ্য কবিতায়। এই কবিতায় কবি আমাদের চারপাশের সবকিছুর স্বাভাবিকতা বজায় রাখার আহ্বান জানিয়েছেন।


৬ষ্ঠ শ্রেণির বাংলা ৬ষ্ঠ অধ্যায় ১ম পরিচ্ছেদ পাঠ পর্যালোচনা

আমি সাগর পাড়ি দেবো কবিতার মূলভাব

‘আমি সাগর পাড়ি দেবো’ বাংলাদেশের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের একটি বিখ্যাত কিশোর কবিতা। তিনি সকল বয়সের মানুষের জন্য সুন্দর সুন্দর কবিতা লিখেছেন। তাঁর কবিতা থেকে প্রেরণা পায় সকল শ্রেণির পাঠক। কবি নিজেকে সাহসী এক সওদাগর ভেবে সাগর পাড়ি দিয়ে দূরে কোথাও অভিযানে যেতে চান। সপ্ত মধুকর বাণিজ্যতরিতে সওদা বোঝাই করে তিনি নিয়ে যাবেন এক ঘাট থেকে অন্যান্য ঘাটে। কবিতার শুরুতেই কবি বলেন—

আমি সাগর পাড়ি দেবো, আমি সওদাগর।
সাত সাগরে ভাসবে আমার সপ্ত মধুকর।
আমার ঘাটের সওদা নিয়ে যাব সবার ঘাটে,
চলবে আমার বেচাকেনা বিশ্বজোড়া হাটে।

কাজী নজরুল ইসলাম দেশপ্রেমিক কবি। আমি সাগর পাড়ি দেবো’ কবিতায়ও মাতৃপ্রেম ও দেশপ্রেমের পরিচয় মেলে। এই কবিতার বিষয়বস্তুতে মা ও স্বদেশ একাকার হয়ে আছে। কবি দুঃসাহসী সওদাগর হয়ে দেশান্তরে যেতে চান। তাই তিনি সাগরে সপ্ত মধুকর ভাসিয়েছেন। কোনো বাধার ভয় তাঁর নেই। পথের যাবতীয় বাধা পেরিয়ে তিনি পৃথিবীর সকল দেশ থেকে ধনরত্ন বোঝাই করে দেশে ফিরতে চান। এমনকি নিজ দেশের উদ্বৃত্ত পণ্য অন্য দেশে রপ্তানি করতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। আর নিজের দেশে অভাবও মিটাতে চান অন্য দেশ থেকে সম্পদ আহরণ করে। কারণ কবির দেশমাতা বড়ো দুঃখী, বড়ো অভাবী। তাই মায়ের অভাব ও দুঃখ ঘুচিয়ে মাকে সুখী করাই কবির জীবনের একমাত্র ব্রত।

আমার বাড়ি কবিতার মূলভাব

‘আমার বাড়ি’ পল্লিকবি জসীমউদ্দীন রচিত একটি সুপরিচিত শিশুতোষ কবিতা। তাঁর কবিতায় বাংলাদেশের পল্লিপ্রকৃতি ও সাধারণ মানুষের সহজসরল স্বাভাবিক রূপটি ফুটে উঠেছে। পল্লির মাটি ও মানুষের জীবনচিত্র তাঁর কবিতায় নতুন মাত্রা পেয়েছে। তিনি এরকম অনেক কবিতা লিখেছেন। সেই জন্যে তাঁকে পল্লিকবি বলা হয়। আমার বাড়ি’ কবিতায়ও এই কথার সমর্থন মেলে। কবিতাটি কবির ‘হাসু’ নামক কাব্যগ্রন্থ থেকে সংকলিত। কবিতার শুরুতেই অতিথিপরায়ণ বাঙালির পরিচয় পাওয়া যায়। কবির ভাষায়-

আমার বাড়ি যাইও ভোমর
বসতে দেবো পিড়ে,
জলপান যে করতে দেবো
শালি ধানের চিড়ে।

‘আমার বাড়ি’ কবিতার ভাষায় কবি তাঁর প্রিয়জনকে নিজের গ্রামের বাড়িতে নিমন্ত্রণ জানাচ্ছেন। এক্ষেত্রে কবির আন্তরিকতার শেষ নেই। অতিথিকে তিনি কীভাবে আপ্যায়ন করবেন সেই কথা আগেই জানিয়ে দিয়েছেন। বন্ধু যদি কবির বাড়িতে বেড়াতে যায় কবি তাকে নানাভাবে আন্তরিকতার সঙ্গে যত্নআত্তি এবং আদর-সমাদর করবেন। কবি তাকে শালি ধানের চিঁড়ে, বিন্নি ধানের খই, বাড়ির গাছের কবরি কলা এবং গামছা-বাঁধা দই দিয়ে আপ্যায়ন করাবেন।

কবির বাড়ির প্রাকৃতিক পরিবেশ অনেক সুন্দর এবং আকর্ষণীয়। প্রকৃতির সান্নিধ্যে কেমন করে অতিথির প্রাণ জুড়াবেন তারও বর্ণনা দিয়েছেন ‘আমার বাড়ি’ কবিতায়। এছাড়া কবি তাঁর বন্ধুকে নিজ বাড়ির পথও জানিয়ে দিয়েছেন। কোন পথে তাঁর বাড়ি যেতে হবে, কীভাবে বাড়ি চিনতে হবে সবই বলেছেন। এই কবিতায় প্রিয়জনের প্রতি ভালোবাসা ও আন্তরিকতার মনোভাব, অতিধি সৎকারে আবহমানকাল ধরে বাঙালিজীবনের সৌজন্য জীবন্ত হয়ে উঠেছে।

বাঁচতে দাও কবিতার মূলভাব

‘বাঁচতে দাও’ কবি শামসুর রাহমান রচিত একটি বিখ্যাত শিশুতোষ কবিতা। তাঁর কবিতায় নাগরিক জীবন, মুক্তিযুদ্ধ, গণ-আন্দোলন নানা অনুভূতিতে রূপায়িত হয়েছে। তাঁর কবিতা তাই দেশপ্রেম ও সমাজ সচেতনতায় সতেজ ও দীপ্ত। তবে ছোটোদের জন্য তিনি বেশ কয়েকটি কবিতার বই লিখেছেন। বইগুলোর মধ্যে ‘এলাটিং বেলাটিং’, ‘ধান ভানলে কুঁড়ো দেবো’, ‘গোলাপ ফোটে খুকির হাতে’, ‘রংধনুর সাঁকো’ উল্লেখযোগ্য। ‘বাঁচতে দাও’ কবিতাটি কবির ‘রংধনুর সাঁকো’ নামক বই থেকে নেওয়া হয়েছে।

আধুনিক কবি শামসুর রাহমানের ‘বাঁচতে দাও’ কবিতাটি প্রকৃতি, পরিবেশ ও প্রাণিজগতের সুস্থ ও স্বাভাবিক বিকাশের শুভকামনার ভাব নিয়ে রচিত। প্রকৃতি ও পরিবেশ মানুষের বেঁচে থাকার প্রধান আশ্রয়। মানুষ ও প্রকৃতি পরিবেশের অংশ। অথচ মানুষের হাতেই দিন দিন এগুলো ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। ফলে বিপন্ন হচ্ছে মানুষ ও প্রাণীদের জীবন। আমাদের চারপাশ যদি সঞ্জীব ও সুন্দর না থাকে তাহলে বেঁচে থাকার আনন্দই বৃথা হয়ে যাবে।

একটি শিশুর সুস্থভাবে বেড়ে ওঠার সঙ্গে তার চারপাশের পরিবেশের সম্পর্ক রয়েছে। যদি পৃথিবীতে ফুল না থাকে, পাখি না থাকে, সবুজ ধ্বংস হয়ে যায় তাহলে শিশুর স্বাভাবিক বিকাশ বাধাগ্রস্ত হবে। তাই উদ্ভিদ ও প্রাণিজগতের সবকিছুকে যার যার অবস্থানে ভালো থাকতে দিতে হবে। কারণ তাদের অস্তিত্বের সঙ্গেই জড়িয়ে আছে আমাদের অস্তিত্ব। বাঁচতে দাও’ কবিতায় সমস্ত প্রতিকূলতা জয় করার কথাই সুন্দর করে তুলে ধরা হয়েছে।


৬ষ্ঠ শ্রেণির বাংলা ৬ষ্ঠ অধ্যায় ১ম পরিচ্ছেদ অধ্যায়ের কাজ

কাজ ১: বুঝে লিখি— ‘আমি সাগর পাড়ি দেবো’ কবিতাটি পড়ে কী বুঝতে পারলে তা নিচে লেখো। [পাঠ্যবই পৃষ্ঠা ৯১]

উত্তর: ‘আমি সাগর পাড়ি দেবো’ মাতৃপ্রেম ও দেশপ্রেমের কবিতা। এই কবিতায় মা ও স্বদেশ একাকার হয়ে আছে। কবি এখানে দুঃসাহসী সওদাগর হয়ে সপ্ত মধুকর সাগরে ভাসিয়ে দেশান্তরে যেতে ইচ্ছুক। পথের সকল বাধা অতিক্রম করে তিনি পৃথিবীর সমুদয় দেশ থেকে ধনরত্ন বোঝাই করে দেশে ফিরতে চান। এমনকি নিজ দেশের উদ্বৃত্ত পণ্য অন্য দেশে রপ্তানি করতেও চান। আর নিজের দেশের অভাবও মিটাতে চান অন্য দেশ থেকে সম্পদ আহরণ করে। কারণ কবির দেশমাতা বড়ো দুঃখী, বড়ো অভাবী। তাই মায়ের অভাব ও দুঃখ ঘুচিয়ে মাকে সুখী করাই কবির জীবনের একমাত্র ব্রত।

কাজ ২: বুঝে লিখি— ‘আমার বাড়ি’ কবিতাটি পড়ে কী বুঝতে পারলে তা লেখো। [পাঠ্যবই পৃষ্ঠা ৯৪]

উত্তর: ‘আমার বাড়ি’ কবিতায় প্রিয়জনকে কবির নিজের গ্রামের বাড়িতে নিমন্ত্রণ জানাচ্ছেন। কবি তাকে নানা যত্নআত্তি ও আদর-সমাদর করবেন । কবি তাকে শালিধানের চিড়ে, বিন্নি ধানের খই, বাড়ির গাছের কবরি কলা এবং গামছা-বাধা দই দিয়ে আপ্যায়ন করবেন। প্রকৃতির সান্নিধ্যে কেমন করে অতিথির প্রাণ জুড়াবেন তারও বর্ণনা দিয়েছেন কবি। এছাড়াও কবি বন্ধুকে নিজ বাড়ির পথও বাতলে দিয়েছেন। কোন পথে তার বাড়ি যেতে হবে, কীভাবে বাড়ি চিনতে হবে তা বলে দিয়েছেন। কবিতায় প্রিয়জনের প্রতি ভালোবাসার মনোভাব ও অতিথি সৎকারে বাঙালি জীবনের সৌজন্যও ফুটে উঠেছে।

কাজ ৩: বুঝে লিখি— ‘বাঁচতে দাও’ কবিতাটি পড়ে কী বুঝতে পারলে তা নিচে লেখো। [পাঠ্যবই পৃষ্ঠা ৯৯]

উত্তর: কবি শামসুর রাহমান বাঁচতে দাও’ কবিতায় প্রকৃতি পরিবেশ ও প্রাণিজগতের সুস্থ ও স্বাভাবিক বিকাশের কথা বলেছেন। একটি শিশুর বিকাশের সাথে তার চারপাশের সুস্থ পরিবেশের সম্পর্ক রয়েছে। প্রকৃতি ও পরিবেশ মানুষের বেঁচে থাকার প্রধান আশ্রয়। কিন্তু মানুষই এই সুন্দর পৃথিবীর ধ্বংস ডেকে আনছে। যদি পৃথিবীতে ফুল না থাকে, পাখি না থাকে, সবুজ ধ্বংস হয়ে যায়, তাহলে শিশুর স্বাভাবিক বিকাশ বাধাগ্রস্ত হবে।

কবিতায় এসব প্রতিকূলতাকে জয় করার কথাই সুন্দর করে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। প্রকৃতির প্রতি বিরূপ আচরণের ফলে পরিবেশের বিপর্যয় নেমে এসেছে। খাল-বিল ভরাট হয়ে যাচ্ছে। ফলে নদীর নাব্যতা নষ্ট হচ্ছে। মাঝিরা নদীতে নৌকায় পাল লাগাচ্ছে না। পানকৌড়ি তার বিচরণের জন্য স্বাভাবিক পরিবেশ পাচ্ছে না। মানুষ দিন দিন শহরমুখী হচ্ছে। ময়লা-আবর্জনায় দিন দিন পরিপূর্ণ হচ্ছে নদী- নালা, খাল-বিল । প্রকৃতি আজ হুমকির মুখে। মানুষ প্রকৃতির সন্তান। কিন্তু এই মানুষই আবার প্রকৃতিকে নিমর্মভাবে নষ্ট করছে।

কাজ ৪: জীবনের সঙ্গে সম্পর্ক খুঁজি – ‘আমি সাগর পাড়ি দেবো’ কবিতাটির সাথে তোমার জীবনের বা চারপাশের কোনো মিল খুঁজে পাও কি না, কিংবা কোনো সম্পর্ক খুঁজে পাও কি না, তা নিচে লেখো। [পাঠ্যবই পৃষ্ঠা ৯২]

উত্তর: ‘আমি সাগর পাড়ি দেবো’ কবিতার মতো আমিও সওদাগর হয়ে দেশে-বিদেশে গিয়ে ব্যবসাবাণিজ্য করতে চাই। সাহসী নাবিকের মতো ভেসে বেড়াতে চাই সাত সাগরের বুকে। আমি আমার বন্ধুদের সাথে এমন কোনো অভিযানে যেতে চাই যেখান থেকে আমরা অনেক ধন- দৌলত, সোনা-রূপা, মণি-মুক্তা লাভ করতে পারবো। তারপর দেশের জন্য দেশের মানুষের জন্য বিলিয়ে দেবো মুঠি ভরে ভরে মণি আর মুক্তা। মায়ের জন্য তৈরি করবো বিশাল এক রাজপ্রাসাদ। নিজের বন্ধুবান্ধব আত্মীয়স্বজন সকলের দুঃখ-কষ্ট চিরতরে ঘুচিয়ে হাসি ফোটাবো সকলের মুখে। সর্বোপরি নিজ দেশের মানুষের সকল কষ্ট-বেদনার অবসান ঘটানোই হবে আমার চির সংকল্প।

কাজ ৫: জীবনের সঙ্গে সম্পর্ক খুঁজি – ‘আমার বাড়ি’ কবিতাটির সাথে তোমার জীবনের বা চারপাশের কোনো মিল খুঁজে পাও কি না, কিংবা কোনো সম্পর্ক খুঁজে পাও কি না, তা নিচে লেখো। [পাঠ্যবই পৃষ্ঠা ৯৫]

উত্তর: ‘আমার বাড়ি’ একটি জীবনঘনিষ্ঠ কবিতা। গ্রাম-বাংলার চিরায়ত অতিথিপরায়ণতা এ কবিতায় অসাধারণভাবে চিত্রিত হয়েছে। উনুনের পাশে পিঁড়িতে বসে খাওয়া বাংলার বহু বছরের ঐতিহ্য। সকালের নাস্তা হিসেবে আমরা খই, চিড়া-মুড়ি খাই। নিজের জমি থেকে আসা শালি ধান দিয়ে ঘরে তৈরি ঢেঁকিছাঁটা চিড়ার তুলনা হয় না। বর্ষা আসার আগে যখন মাঠে কোনো কাজ থাকে না তখন মা চাচিরা সারাদিন বসে বসে বিভিন্ন ধানের মুড়ি ভাজে। হাতে তৈরি সেই মুড়ির সে কি স্বাদ।

গাছের ভেজালমুক্ত পাকা কলা আর পোষা গরুর নির্জল দুধের দই একবার খেলে মুখে স্বাদ লেগে থাকে দীর্ঘদিন। আম কাঁঠালের ঘন ছায়ায় শীতল পাটি বিছিয়ে শুয়ে পড়লে স্নিগ্ধ বাতাসে দেহ-মন জুড়িয়ে যায়। সুনিদ্রা হয়। সকালের ঝিরিঝিরি বাতাসে বাছুরের হাম্বা হাম্বা ডাকের সময় দুধ দোহনের আওয়াজে ঘুম ভেঙে যায়। গ্রামের ছেলেমেয়েরা সারাদিন খেলাধুলায় মেতে থাকে। আমাদের বাড়ির আশেপাশে অসংখ্য গাছগাছালি প্রকৃতির শোভা বর্ধন করে। দিঘির কালো জলে হাঁসের ভেসে বেড়ানো সৌন্দর্যের মাঝে নতুন যাত্রা যোগ করে। এসবই কবিতায় বর্ণিত আমাদের প্রকৃতির অংশ। এগুলো আমাদের জীবনের সাথে মিলেমিশে একাকার হয়ে গেছে।

কাজ ৬: জীবনের সঙ্গে সম্পর্ক যুক্তি – ‘বাঁচতে দাও’ কবিতাটির সাথে তোমার জীবনের বা চারপাশের কোনো মিল খুঁজে পাও কি না, কিংবা কোনো সম্পর্ক খুঁজে পাও কি না, তা নিচে লেখো। [পাঠ্যবই পৃষ্ঠা ৯৯]

উত্তর: প্রকৃতি, পরিবেশ ও প্রাণিজগতের সুস্থ ও স্বাভাবিক বিকাশ নিশ্চিত করা ‘বাঁচতে দাও’ কবিতার মূল সুর। একটি মানব শিশু তার চারপাশের পরিবেশ দ্বারা সবচেয়ে বেশি প্রভাবিত হয়। সুজলা-সুফলা, শস্য-শ্যামলা প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি আমাদের দেশ। প্রকৃতির অনিন্দ্য সুন্দরের মাঝেই আমাদের বেড়ে ওঠা। ফুলবাগানে মৌমাছির আনাগোনা, সুতো কাটা ঘুড়ির পিছনে দুরন্ত বালকের ছুটে বেড়ানো, বাংলার গাঢ় নীল আকাশের বিশালতায় ডানা মেলে দাপিয়ে বেড়ানো চিল, সন্ধ্যায় জোনাকির মিটিমিটি আলো, ক্লান্ত দুপুরে ঘুঘুর ডাক, মাঝির গান, খাল-বিল-পুকুরে পানকৌড়ির ভেসে বেড়ানো এসবই আমাদের প্রকৃতির অংশ।

এমন নির্মল পরিবেশ আজ হুমকির মুখে। আমরা সভ্যতার নামে আমাদের প্রাকৃতিক বাসস্থানকে ধ্বংস করে চলেছি। প্রকৃতিকে আমরা প্রকৃতির মতো রাখতে পারছি না। এর প্রভাব আমাদের উপরই পড়ছে। বাতাসে কার্বন-ডাই-অক্সাইড, ভারি ধাতু ও সীসা নিঃশ্বাসের সাথে আমরা প্রতিনিয়ত গ্রহণ করছি। আমরা আমাদের শিশুদেরকে গৃহবন্দি করে ফেলেছি। তাদের বেড়ে ওঠার সময় আমরা তাদেরকে যন্ত্র বানিয়ে ফেলছি।


৬ষ্ঠ শ্রেণির বাংলা ৬ষ্ঠ অধ্যায় ১ম পরিচ্ছেদ কুইজ প্রশ্ন

প্রশ্ন ১। বাংলাদেশের জাতীয় কবি কে?
উত্তর: বাংলাদেশের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম।

প্রশ্ন ২। কাজী নজরুল ইসলাম কোন বয়সের মানুষের জন্য কবিতা লিখেছেন?
উত্তর: কাজী নজরুল ইসলাম সব বয়সের মানুষের জন্য কবিতা লিখেছেন।

প্রশ্ন ৩। অল্প বয়স থেকেই কাজী নজরুল ইসলাম কী করতে পারতেন?
উত্তর: অল্প বয়স থেকেই কাজী নজরুল ইসলাম কবিতা ও গান রচনা করতে পারতেন।

প্রশ্ন ৪। ‘আমি সাগর পাড়ি দেবো’ কবিতাটি কার লেখা?
উত্তর: ‘আমি সাগর পাড়ি দেবো’ কবিতাটি কাজী নজরুল ইসলামের লেখা।

প্রশ্ন ৫। কবির সপ্ত মধুকর কোথায় ভাসবে?
উত্তর: কবির সপ্ত মধুকর সাত সাগরে ভাসবে।

প্রশ্ন ৬। কবি নিজেকে কী হিসেবে পরিচয় দিয়েছেন?
উত্তর: কবি নিজেকে সওদাগর হিসেবে পরিচয় দিয়েছেন।

প্রশ্ন ৭। কবি তাঁর ঘাটের সওদা নিয়ে কোথায় যাবেন?
উত্তর: কবি তাঁর ঘাটের সওদা নিয়ে সবার ঘাটে যাবেন।

প্রশ্ন ৮। কবির ময়ূরপঙ্খি বজরা কীসের মতো দুলে দুলে চলবে?
উত্তর: কবির ময়ূরপঙ্খি বজরা রাজহাসের মতো দুলে দুলে চলবে।

প্রশ্ন ৯। কবিকে তরি বোঝাই রতন-মানিক কে উপহার দেবে?
উত্তর: কবিকে তরি বোঝাই রতন-মানিক সিন্ধু উপহার দেবে।

প্রশ্ন ১০। নতুন দেশের তাঁর কবিকে কীভাবে ডাকবে?
উত্তর: নতুন দেশের তীর কবিকে হাতছানিতে ডাকবে।

প্রশ্ন ১১। হাঙর, কুমির, তিমিকে ভয় না পাওয়া ছেলে কে?
উত্তর: হাঙর, কুমির, তিমিকে ভয় না পাওয়া ছেলে কবি নিজে।

প্রশ্ন ১২। কবির চারপাশে কোন পাখি এসে ভিড় করবে?
উত্তর: কবির চারপাশে গাংচিল এসে ভিড় করবে।

প্রশ্ন ১৩। কবির সপ্ত সাগর রাজ্যে হাজার নদীর নীর কী জোগায়?
উত্তর: কবির সপ্ত সাগর রাজ্যে হাজার নদীর নীর খাজনা জোগায়।

প্রশ্ন ১৪। কবি তাঁর রাজ্যে কাদেরকে পাহারায় রেখেছেন?
উত্তর: কবি তাঁর রাজ্যে মাল্লামাঝি ও জেলেদের পাহারায় রেখেছেন।

প্রশ্ন ১৫। কবি দেশে দেশে আর কী রাখতে চান না?
উত্তর: কবি দেশে দেশে বিভেদের দেয়াল গাথা রাখতে চান না।

প্রশ্ন ১৬। কবি বন্যা এনে কী ভেঙে একাকার করতে চেয়েছেন?
উত্তর: কবি বন্যা এনে বিভেদ ভেঙে একাকার করতে চেয়েছেন।

প্রশ্ন ১৭। কবি নিজের দেশ ও অন্য দেশের মধ্যে কী দেওয়া-নেওয়ার কথা বলেছেন?
উত্তর: কবি নিজের দেশ ও অন্য দেশের মধ্যে সুধ্য দেওয়া-নেওয়ার কথা বলেছেন।

প্রশ্ন ১৮। কবি কার দুঃখ গোচাতে বাণিজ্যে যান?
উত্তর: কবি দুঃখিনী মায়ের দুঃখ ঘোচাতে বাণিজ্যে যান।

প্রশ্ন ১৯। লাল জহরত পান্নাচুনি মুক্তামালা এনে কবি কী হতে চান?
উত্তর: লাল জহরত পান্নাচুনি মুক্তামালা এনে কবি রাজার কুমার হতে চান।

প্রশ্ন ২০। মায়ের ঘরে যা নেই তা এনে কবি তাঁর মাকে কী করতে চেয়েছেন?
উত্তর: মায়ের ঘরে যা নেই তা এনে কবি তাঁর মাকে রাজরানি করতে চেয়েছেন।

প্রশ্ন ২১। জসীমউদ্দীন কী নামে পরিচিত?
উত্তর: জসীমউদদীন পল্লিকবি নামে পরিচিত।

প্রশ্ন ২২। জসীমউদ্দীন কী নিয়ে কবিতা রচনা করেছেন?
উত্তর: পল্লির জীবন ও প্রকৃতি নিয়ে জসীমউদ্দীন অনেক কবিতা লিখেছেন।

প্রশ্ন ২৩। ‘হাসু’ কবিতার বইটি কার লেখা?
উত্তর: ‘হাসু’ কবিতার বইটি পল্লিকবি জসীমউদ্দীনের লেখা।

প্রশ্ন ২৪। ‘আমার বাড়ি’ কবিতাটি জসীমউদ্দীনের কোন কবিতার বই থেকে নেওয়া হয়েছে?
উত্তর: ‘আমার বাড়ি’ কবিত’টি জসীমউদ্দীনের ‘হাসু’ নামক কবিতার বই থেকে নেওয়া হয়েছে।

প্রশ্ন ২৫। কবি ভোমরকে কোথায় যেতে বলেছেন?
উত্তর: কবি ভোমরকে তাঁর বাড়িতে যেতে বলেছেন।

প্রশ্ন ২৬। বাড়িতে গেলে কবি ভোমরকে কীসে বসতে দেবেন?
উদ্ভব: বাড়িতে গেলে কবি ডোমরকে পিঁড়িতে বসতে দেবেন।

প্রশ্ন ২৭। শালি ধানের চিড়ে আর বিন্নি ধানের খই দিয়ে কবি কী করবেন?
উত্তর: শালি ধানের চিঁড়ে আর বিন্নি ধানের খই দিয়ে কবি ভোমরকে জলপান করতে দেবেন।

প্রশ্ন ২৮। কবির বাড়ির গাছের কলার নাম কী?
উত্তর: কবির বাড়ির গাছের কলার নাম কবরি কলা।

প্রশ্ন ২৯। পামছা বাঁধা দই মানে কী?
উত্তর: গামছা বাঁধা দই মানে জমাট বাঁধা দই।

প্রশ্ন ৩০। কবি ভোমরকে কোথায় আঁচল পেতে শুতে বলছেন?
উত্তর: কবি ভোমরকে আম-কাঁঠালের বনের ধারে আঁচল পেতে শুতে বলছেন।

প্রশ্ন ৩১৷ কবি কী দুলিয়ে সারা রাত বাতাস করবেন?
উত্তর: কবি গাছের শাখা দুলিয়ে সারা রাত বাতাস করবেন।

প্রশ্ন ৩২। কবি কীসের শব্দ শুনে ভোমরকে ঘুম থেকে জেগে ওঠার কথা বলেছেন?
উত্তর: কবি গোরুর দুধ দোয়ানোর শব্দ শুনে তোমরকে ঘুম থেকে জেগে ওঠার কথা বলেছেন।

প্রশ্ন ৩৩। কবি কাকে নিয়ে সারা দিন খেলা করার কথা বলেছেন?
উত্তর: কবি ডোমরকে নিয়ে সারা দিন খেলা করার কথা বলেছেন।

প্রশ্ন ৩৪। কার বাড়ির ডালিম গাছে ডালিম ফুলের হাসি?
উত্তর: কবির বাড়ির ডালিম গাছে ডালিম ফুলের হাসি।

প্রশ্ন ৩৫। হাঁসগুলো কোথায় ভেসে বেড়ায়?
উত্তর: হাঁসগুলো কাজলা দিঘির জলে ভেসে বেড়ায়।

প্রশ্ন ৩৬। কবি ভোমরকে কোন ফুলের গন্ধ শুঁকে রখ থামাতে বলেছেন?
উত্তর: কবি ভোমরকে মৌরি ফুলের গন্ধ শুঁকে রথ থামাতে বলেছেন।

প্রশ্ন ৩৭। যে দিঘির পানি দেখতে কালো মনে হয় তাকে কী বলে?
উত্তর: যে দিঘির পানি দেখতে কালো মনে হয় তাকে কাজলা দিঘি বলে।

প্রশ্ন ৩৮। জলপান অর্থ কী?
উত্তর: জলপান অর্থ হালকা নাশতা খাওয়া।

প্রশ্ন ৩৯। কাঠের তৈরি ছোটো ও নিচু আসনকে কী বলে?
উত্তর: কাঠের তৈরি ছোটো ও নিচু আসনকে পিঁড়ি/পিড়ে বলে।

প্রশ্ন ৪০। বিন্নি, শালি এগুলো কীসের নাম?
উত্তর: বিন্নি, শালি এগুলো ধানের নাম।

প্রশ্ন ৪১। কবি শামসুর রাহমান ছোটোদের জন্য কী লিখেছেন?
উত্তর: কবি শামসুর রাহমান ছোটোদের জন্য কয়েকটি কবিতার বই লিখেছেন।

প্রশ্ন ৪২। ‘এলাটিং বেলাটিং’ বইটি শামসুর রাহমান কাদের জন্য লিখেছেন?
উত্তর: ‘এলাটিং বেলাটিং’ বইটি শামসুর রাহমান ছোটোদের জন্য লিখেছেন।

প্রশ্ন ৪৩। ‘ধান ভানলে কুঁড়ো দেবো’ কবিতার বইটি কে লিখেছেন?
উত্তর: ধান ভানলে কুঁড়ো দেবো কবিতার বইটি কবি শামসুর রাহমান লিখেছেন।

প্রশ্ন ৪৪। গোলাপ ফোটে খুকির হাতে কী ধরনের বই?
উত্তর: ‘গোলাপ ফোটে হুঁকির হাতে একটি কবিতার বই।

প্রশ্ন ৪৫। বাঁচতে দাও’ কবিতাটি কার লেখা?
উত্তর: ‘বাঁচতে দাও’ কবিতাটি শামসুর রাহমানের লেখা।

প্রশ্ন ৪৬। ‘বাঁচতে দাও’ কবিতাটি কবির কোন কবিতার বই থেকে নেওয়া হয়েছে?
উত্তর: ‘বাঁচতে দাও’ কবিতাটি কবির ‘রংধনুর সাঁকো’ নামক কবিতার বই থেকে নেওয়া হয়েছে।

প্রশ্ন ৪৭। কৰি ফুলবাগানের গোলাপকে কী করতে বলেছেন?
উত্তর: কবি ফুলবাগানের গোলাপকে ফুটতে দিতে বলেছেন।

প্রশ্ন ৪৮। কবি কীসের পিছনে বালককে ছুটতে দিতে বলেছেন?
উত্তর: কবি রঙিন কাটা ঘুড়ির পিছনে বালককে ছুটতে দিতে বলেছেন।

প্রশ্ন ৪৯। সোনালি চিল কোথায় পাখা মেলেছে?
উত্তর: সোনালি চিল নীল আকাশে পাখা মেলেছে।

প্রশ্ন ৫০। জোনাক পোকা রোজই কীসের খেলা খেলে?
উত্তর: জোনাক পোকা রোজই আলোর খেলা খেলে।

প্রশ্ন ৫১। মধ্য দিনে নরম ছায়ায় কী ডাকছে?
উত্তর: মধ্য দিনে নরম ছায়ায় ঘুঘু ডাকছে।

প্রশ্ন ৫২। কবি কাকে আঁকতে দিতে বলেছেন?
উত্তর: কবি শিশুকে আঁকতে দিতে বলেছেন।

প্রশ্ন ৫৩। পানকৌড়ি কোথায় সুখে নাইছে?
উত্তর: পানকৌড়ি কাজল বিলে সুখে নাইছে।

প্রশ্ন ৫৪। সুজন মাঝি কোথায় নাও/নৌকা বাইছে?
উত্তর: সুজন মাঝি গহিন গাঙে নাও/নৌকা বাইছে।

প্রশ্ন ৫৫। শ্যামা পাখি কেমন রোদে নাচ জুড়েছে?
উত্তর: শ্যামা পাখি নরম রোদে নাচ জুড়েছে।

প্রশ্ন ৫৬। শিশু, পাখি, ফুলের কুঁড়ি সবাইকে কবি কী দিতে বলেছেন?
উত্তর: শিশু, পাখি, ফুলের কুঁড়ি- সবাইকে কবি বাঁচতে দিতে বলেছেন।

প্রশ্ন ৫৭। মনের ভাব সুন্দর ভাষায় ছোটো ছোটো বাক্যে প্রকাশ করাকে কী বলে?
উত্তর: মনের ভাব সুন্দর ভাষায় ছোটো ছোটো বাক্যে প্রকাশ করাকে কবিতা বলে।

প্রশ্ন ৫৮। কীসে সাধারণত পর পর দুই লাইনের শেষে মিল-শব্দ থাকে?
উত্তর: কবিতায় সাধারণত পর পর দুই লাইনের শেষে মিল-শব্দ থাকে।

প্রশ্ন ৫৯। তালে তালে পড়া যায়, লাইনগুলো নির্দিষ্ট দৈর্ঘ্যের হয়- এগুলো কীসের বৈশিষ্ট্য?
উত্তর: তালে তালে পড়া যায়, লাইনগুলো নির্দিষ্ট দৈর্ঘ্যের হয়- এগুলো কবিতার বৈশিষ্ট্য।

প্রশ্ন ৬০। যারা কবিতা লেখেন তাঁদের কী বলে?
উত্তর: যাঁরা কবিতা লেখেন তাঁদের কবি বলে।


৬ষ্ঠ শ্রেণির বাংলা ৬ষ্ঠ অধ্যায় ১ম পরিচ্ছেদ সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন

প্রশ্ন ১। ‘আমি সাগর পাড়ি দেবো’ কবিতাটির কবি সম্পর্কে তোমরা অনেক কিছুই জানো। বলো তো তার ডাকনাম কী? বাংলা কাব্যজগতে তিনি কী অভিধায় অভিহিত। তাঁর লেখা দুটি কবিতার বইয়ের নাম বলো।
উত্তর: আম সাগর পাড়ি দেবো কবিতার কবির নাম কাজী নজরুল ইসলাম। তাঁর ডাকনাম দুখু মিয়া। বাংলা কাব্যজগতে তিনি বিদ্রোহী কবি হিসেবে পরিচিত। কবির লেখা দুটি কাব্যগ্রন্থ হলো ‘অগ্নিবীণা’, ‘সাম্যবাদী’।

প্রশ্ন ২। আমি সাগর পাড়ি দেবো’ কবিতাটির কবি, নাম অবশ্যই তুমি জানো। বলো তো তিনি কত সালে কোথায় জন্মগ্রহণ করেছেন?
উত্তর: ‘আমি সাগর পাড়ি দেবো’ কবিতাটির কবি কাজী নজরুল ইসলাম। তিনি ১৮৯৯ খ্রিস্টাব্দে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের বর্ধমান জেলার চুরুলিয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।

প্রশ্ন ৩। আমি সাগর পাড়ি দেবো’ কবিতাটিতে উল্লিখিত মূল্যবান পাথরগুলোর নাম খাতায় লেখো।
উত্তর: ‘আমি সাগর পাড়ি দেবো’ কবিতায় উল্লিখিত মূল্যবান পাথরগুলোর হলো- রত্ন, মানিক, মুক্তা, মণি, জহরত, পান্না, চুনি ইত্যাদি।

প্রশ্ন ৪। আমি সাগর পাড়ি দেবো’ কবিতা থেকে কবির কী কী ইচ্ছ কথা তুমি জানতে পারলে?
উত্তর: ‘আমি সাগর পাড়ি দেবো’ কবিতা থেকে জানতে পারলাম, সপ্ত মধুকর সাগরে ভাসিয়ে সওদাগর হয়ে দেশান্তরে চলে যেতে চান। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ ঘুরে ব্যবসাবাণিজ্য করে ধনরত্ন, মণিমুক্তা, পান্না- হীরা বোঝাই করে নিজ দেশে ফিরে আসতে চান। কবিতায় কবি নিজের দেশের অভাব মিটাতে চান অন্য দেশের সম্পদ আহরণ করে। তিনি তার দেশের ও মায়ের দুঃখ ঘোচাতে চান। লাল জহরত মুক্তা এনে তার মাকে রাজরানি বানিয়ে কবি হতে চান রাজকুমার।

প্রশ্ন ৫। কবিতাংশটি ভালো করে পড়ো।
আমার দেশে থাকলে সুধা তাদের দেশে নেবো
তাদের দেশের সুধা এনে আমার দেশে দেবো।’
চরণ দুটি পড়ে তুমি কী বুঝতে পেরেছো? ব্যাখ্যা করো।

উত্তর: কবি চরণ দুটি দ্বারা বোঝাতে চান যে ব্যবসায়ের পাশাপাশি তিনি বিভিন্ন দেশের সাথে সংস্কৃতির আদান-প্রদান করবেন। আমাদের দেশের সকল সুকুমার বৃত্তি মানুষের শ্রম, বিছানের শিক্ষা, সৎ মানুষের আদর্শ, ত্যাগী ও মহান ব্যক্তিদের মহানুভবতা, মানুষের বিশ্বস্ততা, আস্থা, বিশ্বাস, ভরসা, আমাদের দেশের সরলমনা মানুষের মুখের অকৃত্রিম হাসি, পারিবারিক দৃঢ় বন্ধন, সাদা মনের মানুষের বদান্যতা, দানশীলতা এসব তিনি তাঁর বাণিজ্যকৃত দেশে ছড়িয়ে দেবেন। আবার সেসব দেশ থেকে শৃঙ্খলাবোধ, সময়ানুবর্তিতা, সততা, আদর্শ, আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীলতা, নিয়মানুবর্তিতা, কাজের প্রতি একাগ্রতা, অসহায়ের প্রতি বদান্যতা, উদার মানবিকতাবোধ ইত্যাদি তিনি আমাদের দেশে নিয়ে আসবেন।

প্রশ্ন ৬। নিচের চরণ দুটি পড়ো। চরণ দুটি পড়ে কী উপলব্ধি করলে তা নিজের ভাষায় লেখো।
‘দেশে দেশে দেয়াল গাঁথা রাখব নাকো আর,
বন্যা এনে ভাঙব বিভেদ করব একাকার।’
উত্তর: কবি পৃথিবীর সকল শ্রেণি-পেশার মানুষদেরকে এক কাতারে দেখতে চান। কবির কাছে জাত, পাত, ধর্ম, বর্ণ, ধনী-গরিব, শ্বেতাঙ্গ, কৃষ্ণাঙ্গ, রাজা-প্রজা, শাসক-শোষিত, মালিক-কর্মচারী সব এক।

সবাইকে তিনি মানুষ হিসেবে এক চোখে এক পর্যায়ে দেখতে চান। বিশ্বব্যাপী যত বিভেদের দেয়াল তৈরি হয়েছে কবি সেগুলো ভেঙে ফেলতে চান। শান্তি, সাম্য আর সম্প্রীতি দিয়ে তিনি বিভেদ, ব্যবধান ঘোচাতে চান। কবি এমন একটি বিশ্বের স্বপ্ন দেখেন যেখানে সব মানুষ মিলেমিশে একাকার। কবি এর জন্য ভালোবাসার বন্যা দিয়ে বিভেদের সব প্রাচীর ভেঙে গুঁড়িয়ে দিতে চান।

প্রশ্ন ৭। কবি অতিথিকে কীভাবে আপ্যায়ন করাবেন?
উত্তর: কবি অতিথিকে নানান যত্ন-আত্তি ও আদর-সমাদর করে শালি ধানের চিড়া, বিন্নি ধানের খই, গামছা বাঁধা দই দিয়ে আপ্যায়ন করাবেন।

প্রশ্ন ৮। ‘আমার বাড়ি’ কবিতার কোন বিষয়টি প্রধান হয়ে ফুটে উঠেছে?
উত্তর: অতিথি আপ্যায়নের সাথে বাংলার ঐতিহ্যবাহী খাদ্য এবং অতিথির প্রতি আন্তরিক যত্নের বিষয়টি ‘আমার বাড়ি’ কবিতার প্রধান হয়ে ফুটে উঠেছে। পাশপাশি বাংলার চিরসবুজের অপরূপ প্রাকৃতিক সৌন্দর্যও কবিতাটিতে প্রতিফলিত হয়েছে।

প্রশ্ন ৯। কবি তাঁর বন্ধুকে কীভাবে পথের ঠিকানা দিয়েছেন?
উত্তর: কবি তাঁর বন্ধুকে অত্যন্ত শৈল্পিক উপায়ে বাড়ির ঠিকানা দিয়েছেন । কবি প্রচ্ছন্নভাবে বলেছেন, তাঁর বাড়ির পাশে মৌরি স্কুলের বাগান আছে। ফুলের ঘ্রাণে চারপাশ আমোদিত। মৌরি ফুলের ঘ্রাণ পাওয়ামাত্রই রথ থামাতে হবে। সেখানেই কবির বাড়ি।

প্রশ্ন ১০। ‘আমার বাড়ি’ কবিতায় বর্ণিত প্রকৃতির বর্ণনা দাও।
উত্তর: কবির বাড়ির পাশে মৌরি ফুলের বাগান আছে। দিঘির কাজল কালো জলে হাঁস ভেসে বেড়ায়, ডালিম গাছে ফুল ফুটে আছে। আর আম-কাঁঠালের ঘন ছায়ায় শুয়ে ঘুমালে মৃদুমন্দ বাতাসে দেহ-মন শীতল হয়ে যায়।

প্রশ্ন ১১। ‘আমার বাড়ি’ কবিতা অনুসারে কবির বাড়ির একটি বর্ণনা দাও।
উত্তর: কবির বাড়িটি একটি আদর্শ কৃষক গৃহস্থের দৃশ্যের অবতারণা করে। তাঁর বাড়িতে শালি ধানের চিড়া, বিন্নি ধানের খই আছে। বাড়ির পাশে কবরি কলা গাছ আছে। সেখানে গরু পালন করে সকালে পাড়ি দোহন করতে হয়। অর্থাৎ বাড়িতে একটি গোয়ালঘর আছে। ধান রাখার জন্য গোলা আছে। খড়ের গাদা আছে।

প্রশ্ন ১২। ‘আমার বাড়ি’ কবিতা অনুসারে কবির গ্রামের একটি বর্ণনা দাও।
উত্তর: কবির বাড়ি বাংলার ঐতিহ্যবাহী একটি গ্রামে। গ্রামে আম- কাঁঠালের বন রয়েছে। দিঘি রয়েছে। দিঘিতে হাঁস সাঁতরে বেড়ায়। গ্রামে মৌরি ফুলের বাগান রয়েছে। গ্রামের বেশিরভাগ মানুষ কৃষি কাজ করে। এটি সুজলা-সুফলা শস্য-শ্যামলা একটি গ্রাম।

প্রশ্ন ১৩। ‘সারাটা দিন তোমার পরে করব আমি খেলা।’ তোমরা কি বলতে পারবে কবি এই লাইনটি দ্বারা কী বোঝাতে চেয়েছেন?
উত্তর: কবি তাঁর নিমন্ত্রিত অতিথিকে নিয়ে খুবই উচ্ছ্বসিত। কবির প্রিয় অতিথি যদি কবির বাড়িতে বেড়াতে যায় তাহলে কবি তাকে নানানভাবে আদর-আপ্যায়ন করবেন। তার মনকে প্রফুল্ল করার জন্য কবি তাকে নিয়ে সারাদিন খেলাধুলা করবেন। কবি তাকে সময় দেবেন।

প্রশ্ন ১৪৷ কৰি ফুলকে ফুটতে দিতে বলেছেন কেন?
উত্তর: ফুল সৌন্দর্য এবং পবিত্রতার প্রতীক। ফুল দেখলে আমাদের মন ভালো হয়ে যায়। ফুলের ঘ্রাণ আমাদের নয়ন-মন আমোদিত করে। পরিবেশের সৌন্দর্য বিকাশে ফুলের বিকল্প অন্য কিছুই হয় না। ফুলের কারণে বাংলায় প্রকৃতি এত সুন্দর। তাই কবি নির্বিঘ্নে ফুলকে ফুটতে দিতে মানুষকে বলেছেন।

প্রশ্ন ১৫। বালক কেন ঘুড়ির পিছনে ছুটে বেড়ায়?
উত্তর: প্রাণোচ্ছল দুরন্ত বালক গ্রামের মেঠো পথে, ধানের মাঠে, খালপথে ঘুড়ি উড়িয়ে বেড়ায়। ঘুড়ির সুতা কেটে গেলে ঘুড়ি উড়তে উড়তে অনেক দূরে গিয়ে মাটিতে পড়ে যায়। তখন বালকেরা সেই ঘুড়ি ধরার জন্য ঘুড়ির পিছনে পিছনে ছুটতে থাকে। যে সবার আগে ঘুড়ির কাছে গিয়ে ঘুড়িটা ধরতে পারবে, ঘুড়িটা তার হয়ে যাবে। ঘুড়ি উড়িয়ে, কাটা ঘুড়ি সবার আগে ধরে বালক আনন্দ পায়। এই জন্যেই বালক ঘুড়ির পিছনে ছুটে বেড়ায়।

প্রশ্ন ১৬। কবি কেন বালককে ঘুড়ির পিছনে ছুটতে দিতে বলেছেন?
উত্তর: বালক বয়সে ছেলেমেয়েরা ছুটে বেড়াবে, ঘুড়ি উড়াবে, নির্মোহ আনন্দ-উচ্ছ্বাসে সময় কাটাবে। তাহলেই তারা সুষ্ঠু স্বাভাবিকভাবে বেড়ে উঠতে পারবে। নিয়মিত খেলাধুলা করলে শরীর ভালো থাকে, মন প্রফুল্ল হয়। পড়াশোনা ভালো হয়, প্রতিভা বিকশিত হয়। তাই কবি বালককে ঘুড়ির পিছনে ছোটার সুযোগ দিতে বড়োদের বলেছেন।

প্রশ্ন ১৭। কবি পাখিদের কথা কেন বলেছেন?
উত্তর: পাখিরা মুক্ত স্বাধীন। এরা যখন যেখানে ইচ্ছে উড়ে বেড়াতে পারে। পাখিরা বনে-বাদাড়ে অবাধে বিচরণ করে। এদের জীবন বড়ই আনন্দের। এরা প্রকৃতির অংশ। পাখিদেরকে খাঁচায় বন্দি করে রাখলে যেমন তাদের সব আনন্দ নষ্ট হয়ে যায় ঠিক তেমনই শিশুদের যদি বাড়িতে সারাক্ষণ আটকে রাখা হয় তাহলে শিশুদেরও সব আনন্দ নষ্ট হয়ে যায়। শিশুদেরকে সারাক্ষণ পড়াশোনার জন্য চাপাচাপি করা যাবে না। পড়াশোনাটা তাদের কাছে আকর্ষণীয় করে তুলতে হবে। তাহলে তারা মনের আনন্দে আগ্রহে পড়াশোনা করবে। তাদের জীবন হবে পাখিদের মতো অবাধ, অসীম, বিস্তৃত।

প্রশ্ন ১৮। শিশু, পাখি, ফুলের কুঁড়ি সবাইকে বাঁচতে দেওয়ার অর্থ কী?
উত্তর: শিশু, পাখি, ফুলের কুঁড়ি সবাইকে বাঁচতে দেওয়ার অর্থ সবাইকে তাদের নিজের মতো থাকতে দেওয়া। শিশুকে আপন মনে খেলতে দিতে হবে। ঘুড়ির পিছনে ছুটে বেড়াতে দিতে হবে। পুকুরে সাঁতার কাটতে দিতে হবে। সর্বত্র তার অবাধ বিচরণ নিশ্চিত করতে হবে। তেমনই বনের পাখিকে খাঁচায় বন্দি করে রাখা যাবে না। তাকে মুক্ত আকাশে উড়ে বেড়ানোর অবারিত সুযোগ দিতে হবে। প্রকৃতিকে নষ্ট করা যাবে না। চারপাশে ফুল ফোটার সুষ্ঠু পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে এবং বজায় রাখতে হবে।

প্রশ্ন ১৯। মাঝির নৌকা বাওয়ার সাথে প্রকৃতির কী সম্পর্ক?
উত্তর: বাংলাদেশ নদীমাতৃক দেশ। এদেশের আনাচে-কানাচে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে অসংখ্য নদী। নদী আমাদের জলবায়ুকে নিয়ন্ত্রণ করে। নদীর পানি দিয়ে আমরা কৃষিকাজ করি। নদী আমাদের কৃষি জমিকে উর্বর সুফলা করে রাখে। নদী থেকে আমরা মাছ পাই। জেলেরা নদী থেকে তাজা মাছ ধরে আনে। মাছ আমাদের প্রিয় খাদ্য। আমিষের প্রধান উৎস। মাছে ভাতে বাঙালির জীবন জুড়ে নদীর অবদান জড়িয়ে আছে। নদীর সাথে তাই গ্রামবাংলার মানুষের নিবিড় সখ্য।

প্রশ্ন ২০। ‘বাঁচতে দাও’ কবিতার বিষয়, মূলভাব চিহ্নিত করে নিজের ভাষায় লেখ।
উত্তর: কবি শামসুর রাহমান ‘বাঁচতে দাবিতায় প্রকৃতি পরিবেশ ও প্রাণিজগতের সুস্থ ও স্বাভাবিক বিকাশের কথা বলেছেন। একটি শিশুর বিকাশের সাথে তার চারপাশের সুস্থ পরিবেশের সম্পর্ক রয়েছে। প্রকৃতি ও পরিবেশ মানুষের বেঁচে থাকার প্রধান আশ্রয়। কিন্তু মানুষই এই সুন্দর পৃথিবীর ধ্বংস ডেকে আনছে। যদি পৃথিবীতে ফুল না থাকে, পাখি না থাকে, সবুজ ধ্বংস হয়ে যায়, তাহলে শিশুর স্বাভাবিক বিকাশ বাধাগ্রস্ত হবে।

কবিতায় এসব প্রতিকূলতাকে জয় করার কথাই সুন্দর করে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। প্রকৃতির প্রতি বিরূপ আচরণের ফলে পরিবেশের বিপর্যয় নেমে এসেছে। খাল-বিল ভরাট হয়ে যাচ্ছে। ফলে নদীর নাব্যতা নষ্ট হচ্ছে। মাঝিরা নদীতে নৌকায় পাল লাগাচ্ছে না। পানকৌড়ি তার বিচরণের জন্য স্বাভাবিক পরিবেশ পাচ্ছে না। মানুষ দিন দিন শহরমুখী হচ্ছে। ময়লা আবর্জনায় দিন দিন বন্ধ হচ্ছে নদী-নালা, খাল-বিল। প্রকৃতি আজ হুমকির মুখে। মানুষ প্রকৃতির সন্তান। কিন্তু এই মানুষই আবার প্রকৃতিকে নিমর্মভাবে নষ্ট করছে।

প্রশ্ন ২১। নিজের জীবন ও পারিপার্শ্বের সঙ্গে ‘বাঁচতে দাও’ কবিতার সম্পর্ক তৈরি করো।
উত্তর: প্রকৃতি, পরিবেশ ও প্রাণিজগতের সুস্থ ও স্বাভাবিক বিকাশ নিশ্চিত করা ‘বাঁচতে দাও’ কবিতার মূল সুর। একটি মানব শিশু তার চারপাশের পরিবেশ দ্বারা সবচেয়ে বেশি প্রভাবিত হয়। সুজলা-সুফলা, শস্য-শ্যামলা প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি আমাদের দেশ। প্রকৃতির অনিন্দ্য সুন্দরের মাঝেই আমাদের বেড়ে ওঠা।

ফুল বাগানে মৌমাছির আনাগোনা, সুতো কাটা ঘুড়ির পিছনে দুরন্ত বালকের ছুটে বেড়ানো, বাংলার গাঢ় নীল আকাশের বিশালতায় ডানা মেলে দাপিয়ে বেড়ানো চিল, সন্ধ্যায় জোনাকির মিটিমিটি আলো, ক্লান্ত দুপুরে ঘুঘুর ডাক, মাঝির গান, পানকৌড়ির ভেসে বেড়ানো এসবই আমাদের প্রকৃতির উপাদান। এমন নির্মল পরিবেশ আজ হুমকির মুখে। আমরা সভ্যতার নামে আমাদের প্রাকৃতিক বাসস্থানকে ধ্বংস করে চলেছি। প্রকৃতিকে আমরা প্রকৃতির মতো রাখতে পারছি না। এর প্রভাব আমাদের উপরই পড়ছে। বাতাসে কার্বন ডাই-অক্সাইড, ভারী ধাতু ও সীসা নিশ্বাসের সাথে আমরা প্রতিনিয়ত গ্রহণ করছি। আমরা আমাদের শিশুদেরকে গৃহবন্দি করে ফেলেছি। তাদের বেড়ে ওঠার সময় আমরা তাদেরকে যন্ত্র বানিয়ে ফেলছি।

প্রশ্ন ২২। ‘বাঁচতে দাও’ কবিতায় কবি কাকে বাঁচতে দিতে বলেছেন?
উত্তর: বাঁচতে দাও’ কবিতায় কবি প্রকৃতির অবাধ গতিময়তাকে বাঁচতে দিতে বলেছেন। বাগানের ফুল যেন নির্বিঘ্নে ফুটতে পারে, দুরন্ত বালক যেন তার শৈশবকে হেসে-খেলে কাটাতে পারে। নীল- আকাশে ডানা মেলা চিল, জোনাকি পোকা, মধ্য দিনে ঘুঘুর ডাক, সবুজে ঘেরা গ্রাম এসবই একটি সুস্থ শিশুর স্বাভাবিকভাবে বেড়ে উঠার জন্য অত্যন্ত জরুরি। আমাদের শিশুদের বাঁচানোর জন্য আমাদের পরিবেশকে বাঁচাতে হবে।

প্রশ্ন ২৩। বাঁচতে দেওয়ার জন্য কবি কী কী কাজ করতে বলেছেন?
উত্তর: কবি নির্বিঘ্নে গোলাপকে ফুটতে দিতে বলেছেন। শিশুকে তার শৈশবের আমোদ-প্রমোদ থেকে বঞ্চিত করতে নিষেধ করেছেন। প্রকৃতির বিভিন্ন উপাদান যেমন গাছপালা, পশু-পাখি, নদী-নালা, খাল- বিল এগুলোর যত্ন নিতে বলেছেন। পাখির কলকাকলি, মাঝির মাঝ দরিয়ায় নৌকা ভাসানো, বালুচরে অবুঝ শিশুর খেলাঘর তৈরি করা সবুজ বাংলার এইসব ঐতিহ্য টিকিয়ে রাখতে বলেছেন। শিশুদেরকে বেড়ে ওঠার জন্য একটি সুন্দর নির্মল পরিবেশ উপহার দিতে বলেছেন।


আরও দেখুন: ৬ষ্ঠ শ্রেণির বাংলা ৪র্থ অধ্যায় – চারপাশের লেখার সাথে পরিচিত হই
আরও দেখুন: ৬ষ্ঠ শ্রেণির বাংলা ৫ম অধ্যায় ১ম পরিচ্ছেদ – প্রায়োগিক লেখা
আরও দেখুন: ৬ষ্ঠ শ্রেণির বাংলা ৫ম অধ্যায় ২য় পরিচ্ছেদ – বিবরণমূলক লেখা
আরও দেখুন: ৬ষ্ঠ শ্রেণির বাংলা ৫ম অধ্যায় ৩য় পরিচ্ছেদ – তথ্যমূলক লেখা
আরও দেখুন: ৬ষ্ঠ শ্রেণির বাংলা ৫ম অধ্যায় ৪র্থ পরিচ্ছেদ – বিশ্লেষণমূলক লেখা
আরও দেখুন: ৬ষ্ঠ শ্রেণির বাংলা ৫ম অধ্যায় ৫ম পরিচ্ছেদ – কল্পনানির্ভর লেখা


আশাকরি “৬ষ্ঠ শ্রেণির বাংলা ৬ষ্ঠ অধ্যায় ১ম পরিচ্ছেদ প্রশ্ন উত্তর” আর্টিকেল টি আপনাদের ভালো লেগেছে। আমাদের কোন আপডেট মিস না করতে ফলো করতে পারেন আমাদের ফেসবুক পেজ, এবং লাইভ ক্লাস করতে সাবক্রাইব করতে পারেন আমাদের ইউটিউব চ্যানেল।