|

৬ষ্ঠ শ্রেণির বাংলা ৬ষ্ঠ অধ্যায় ২য় পরিচ্ছেদ – গান

৬ষ্ঠ শ্রেণির বাংলা ৬ষ্ঠ অধ্যায় ২য় পরিচ্ছেদ: সাধারণত কোনো একটি ভাব নিয়ে গান রচিত হয়। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচিত আমরা সবাই রাজা’ গানটি মূলত মনের ইচ্ছার ক্ষেত্রে সকল মানুষই স্বাধীন এবং নিজেই মনের ইচ্ছার রাজা এই ভাব নিয়ে রচিত হয়েছে। গান ও কবিতার মধ্যে মিল থাকলেও অমিলও রয়েছে। যেমন: গান ও কবিতার দুই লাইনের শেষে মিল-শব্দ থাকলেও গানে কোনো একটা মিল বারবার ফিরে আসে।

আমরা সবাই রাজা গানে নইলে মোদের রাজার সনে মিলব কী স্বত্ত্বে লাইনটি বারবার ফিরে এসেছে। এছাড়াও গান কবিতার মতো সুর করে পড়া গেলেও পাস পাওয়ার জন্য তবলা, ঢোল ইত্যাদি বাদ্যযন্ত্র ব্যবহার করা হয়, যা কবিতার ব্যবহৃত হয় না। পান যিনি লেখেন তাঁকে গীতিকার বলা হয়। যিনি গানে সুর দেন তাঁকে বলা হয় সুরকার। আর যিনি গান গেয়ে শোনান তাঁকে বলা হয় গায়ক বা শিল্পী।


৬ষ্ঠ শ্রেণির বাংলা ৬ষ্ঠ অধ্যায় ২য় পরিচ্ছেদ পাঠ পর্যালোচনা

‘আমরা সবাই রাজা’ একটি সুপরিচিত গান। এই জনপ্রিয় গানটির রচয়িতা বা গীতিকার বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। তাঁর গানগুলোর অধিকাংশই ‘গীতবিতান’ গ্রন্থের অন্তর্ভূক্ত। আমরা সবাই রাজা’ গানটি তাঁর ‘রাজা’ নাটক থেকে গৃহীত। রবীন্দ্রনাথের গানগুলো ‘রবীন্দ্র-সংগীত’ নামে পরিচিত। ‘গীতাঞ্জলি’ কাব্যের জন্য তিনি ১৯১৩ সালে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন। এশিয়া মহাদেশে সাহিত্যে তিনিই প্রথম নোবেলজয়ী।

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বাংলা সাহিত্যের যে শাখায় হাত দিয়েছেন সেখানেই সোনা ফলেছে। কবিতা, ছোটোগল্প, উপন্যাস, নাটক, প্রবন্ধ, শিশু- সাহিত্য, সংগীত ইত্যাদি সাহিত্যের প্রতিটি শাখাই তাঁর অবদানে অত্যুজ্জ্বল। তাঁর গানের মধুর সুরে বাঙালি শান্তিতে ঘুমায়। গান হলো কবিতার মতো তালের ব্যাপার । হাততালি বাজিয়ে তালে তালে পড়া যায়। গান আর কবিতার বৈশিষ্ট্যের মধ্যে বেশকিছু সাদৃশ্য বিদ্যমান।

রবীন্দ্রনাথের ‘আমরা সবাই রাজা’ গানটির মূলভাব স্বাধীনতা, শক্তি এবং ঐক্য। অধিকার চেতনার ওপর ভিত্তি করে গানটি রচিত। মানুষে মানুষে সমতা ও গণতান্ত্রিক চেতনাও এই গানে প্রতিফলিত। যুগ-যুগান্তরের দাসত্বের শৃঙ্খল থেকে বেরিয়ে এসে নিজেদের স্বাধীন ও স্বচ্ছন্দভাবে বাঁচতে পারার মনোভাব নিয়ে গানটি রচিত। শিশুদের মনে দেশ ও দশের প্রতি দায়বদ্ধতা এবং সকলকে সম্মান করার মূল্যবোধের ভাব জাগ্রত করার চেষ্টা এতে লক্ষ করা যায়। এছাড়া সবাইকে সাথে নিয়ে, সমান গুরুত্ব দিয়ে রাজ্য পরিচালনা করলে রাজা সফল হতে পারেন, গানটিতে ইঙ্গিতে সেই কথাও বলা হয়েছে।


৬ষ্ঠ শ্রেণির বাংলা ৬ষ্ঠ অধ্যায় ২য় পরিচ্ছেদ অধ্যায়ের কাজ

কাজ ১: বুঝে লিখি- আমরা সবাই রাজা’ গানটি পড়ে কী বুঝতে পারলে তা নিচে লেখো। [পাঠ্যবই পৃষ্ঠা ১০৫]

উত্তর: ‘আমরা সবাই রাজা’ গানটির মাধ্যমে শিশুমনে সমাজের প্রতি দায়বন্ধতা, সম্প্রীতি ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের ভাব জাগ্রত করার চেষ্টা করা হয়েছে। এর মূলভাব হলো— স্বাধীনতা, শক্তি ও ঐক্য। গানটি অধিকার চেতনার। মানুষে মানুষে সমতা ও গণতান্ত্রিক চেতনার গানও এটি সবাইকে সাথে নিয়ে, সবাইকে সম্মান ও গুরুত্ব দিয়ে রাজ্য শাসন করলে রাজা ব্যর্থ হন না।

জনগণকে সম্মান দিলে প্রকৃতপক্ষে রাজাই সম্মানিত হন. এই দিকগুলো খুব সুন্দরভাবে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে গানটিতে। ছোটো-বড়ো ভেদাভেদ ভুলে গিয়ে সবাইকে একইসূত্রে গাঁথা হয়েছে এখানে। যার যার নিজস্ব ঢঙে আলাদা ব্যক্তিসত্তার প্রতি গুরুত্ব দিয়ে রচিত হয়েছে গানটি। সর্বোপরি, এই গানের মধ্য দিয়ে সকলের সম অধিকারের কথা বলা হয়েছে।

কাজ ২: একদিন তুমি বিদ্যালয় থেকে বাড়ি ফেরার সময় দেখলে তোমার এলাকার একজন প্রভাবশালী মাতব্বর তার বাড়ির কাজের লোকের সাথে খারাপ ব্যবহার করছে। ঘটনাটি কেমন হলে ভালো হতো বলে তুমি মনে করো? তোমার পঠিত আমরা সবাই রাজা’ গানটির আলোকে ঘটনাটি বিশ্লেষণ করতে পারবে? তোমার মতামতটি খাতায় লেখো।

উত্তর : পৃথিবীতে কোনো মানুষ অন্য মানুষের দাস নয়। মানুষের সবচেয়ে বড় পরিচয় সে মানুষ। দাসত্বের শৃঙ্খল থেকে বেরিয়ে এসে মাথা উঁচু করে বাঁচতে শিখতে হবে। উল্লিখিত মাতব্বরের কাজটি কোনোভাবেই ঠিক হয়নি। সে মানুষকে মানুষ হিসেবে মূল্যায়ন করতে ব্যর্থ হয়েছে। ক্ষমতাবান ব্যক্তি যদি তার অধীনদের সাথে ভালো ব্যবহার করে, তাকে শ্রদ্ধা করে তারা সম্মানের জায়গাটা সুরক্ষিত রাখে তাহলে দিন শেষে ক্ষমতাবান ব্যক্তিটি অধিক সম্মানিত হয়। অধীনরা তাকে মন থেকে শ্রদ্ধা-ভক্তি করে। ঊর্ধ্বতন এবং অধীন যদি একসাথে হাতে হাত রেখে কাজে নামে তাহলে সেই কাজে সফল হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে।

কাজ ৩: মনে করো তুমি বড়ো হয়ে কোনো অফিসের বড় বস হলে। তুমি তোমার অধীনতদের সাথে কেমন আচরণ করবে? ‘আমরা সবাই রাজা’ গানটির আলোকে বিষয়টি ব্যাখ্যা করো।

উত্তর : আমি যদি বড় হয়ে কোনো অফিসের বস হই তাহলে আমি আমার অধীনদের সাথে সভা, সার্জিত, সম্মানজনক এবং বন্ধুত্বসুলভ আচরণ করব। মানুষের আসল পরিচয় তারা মানুষ। কেউ কারও চেয়ে বড়ো ময়, কেউ কারও চেয়ে ছোটো নয়। কেউ কারও প্রভু নয়, আবার কেউ কারও দাস নয়। মানুষকে তার প্রাপ্য সম্মান দিলে সেই সম্মান আবার বহুগুশে ফেরত পাওয়া যায়। আমি যেকোনো কাজ তাদের সাথে মিলে করব। কাজের প্রশংসা করে তাদেরকে উদ্বুদ্ধ করব। আমাদের যেকোনো সাফল্যকে দলীয় সাফল্য হিসেবে আখ্যায়িত করব। এভাবে প্রত্যেক অধীনের মনে জায়গা করে নেওয়ার চেষ্টা করব। কেউ ভুল করলে তাকে তিরস্কার না করে শুধরে দেব।

কাজ ৪ : আমরা সবাই রাজা’ গানটির মর্মার্থ উপলবন্দি করে তোমরা কি বলতে পারবে একজন আদর্শবান রাজা ধরনের বৈ অধিকারী হবেন?

উত্তর: একজন রাজা হবেন সৎ, নির্ভীক, ন্যায়বিচারক, পরোপকারী, পরমতসহিষ্ণু। তিনি তাঁর সকল আমলা ও প্রভাকে নিয়ে একত্রে কাজ করবেন। রাজ্যের গুরুত্বপূর্ণ পদে যথাযোগ্য ব্যক্তিকে দায়িত্ব দেবেন। প্রত্যেক ব্যক্তিকে প্রাপ্য অনুযায়ী সম্মান দেবেন। রাজা তার রাজ্যে অন্যায়, জুলুমের কোনো চিহ্ন রাখবেন না। তিনি ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করবেন না। কাউকে দালেও পরিণত করবেন না। সবাই রাজার আপনজন। রাজা সবাইকে সম্মান করার ফলে তিনি সেই সম্মান বহুগুণে ফেরত পাবেন। রাজা কাউকে ছোটোও করবেন না। একসাথে কাজ করলে কোনো কাজে ব্যর্থ হবেন না।


৬ষ্ঠ শ্রেণির বাংলা ৬ষ্ঠ অধ্যায় ২য় পরিচ্ছেদ কুইজ প্রশ্ন

প্রশ্ন ১। বাংলা সাহিত্যের সেরা কবি কী?
উত্তর: বাংলা সাহিত্যের সেরা কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর।

প্রশ্ন ২। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর সাহিত্যের কোন কোন শাখায় অবদান রেখেছেন?
উত্তর: রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর সাহিত্যের সব শাখায় অবদান রেখেছেন।

প্রশ্ন ৩। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কোন কাব্যের জন্য নোবেল পুরস্কার পান?
উত্তর: রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ‘গীতাঞ্জলি’ কাব্যের জন্য নোবেল পুরস্কার পান।

প্রশ্ন ৪। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কত সালে নোবেল পুরস্কার পান?
উত্তর: রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ১৯১৩ সালে নোবেল পুরস্কার পান।

প্রশ্ন ৫। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কোন গানটি বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত?
উত্তর: রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘আমার সোনার বাংলা’ গানটি বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত।

প্রশ্ন ৬। ‘আমরা সবাই রাজা’ গানটি কার লেখা?
উত্তর: ‘আমরা সবাই রাজা’ গানটি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা।

প্রশ্ন ৭। ‘আমরা সবাই রাজা’ গানটি কোথা থেকে নেওয়া হয়েছিল?
উত্তর: আমরা সবাই রাজা’ গানটি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা ‘রাজা’ নাটক থেকে নেওয়া হয়েছিল।

প্রশ্ন ৮। আমরা যা খুশি তাই করলেও কার খুশিতেই চরি?
উত্তর: আমরা যা খুশি তাই করলেও আমাদের রাজার খুশিতেই চরি।

প্রশ্ন ৯। আমরা দাসের রাজার ত্রাসের দাসত্বে কী নই?
উত্তর: আমরা দাসের রাজার ত্রাসের দাসত্বে বাঁধা নই।

প্রশ্ন ১০। “বিষম আবর্ত’ মানে কী?
উত্তর: ‘বিষম আবর্ত’ মানে ভীষণ ঘূর্ণিপাক।

প্রশ্ন ১১। ‘দাসত্ব’ অর্থ কী?
উত্তর: ‘দাসত্ব’ অর্থ পরাধীনতা।

প্রশ্ন ১২। ‘গান’ কী নিয়ে রচিত হয়?
উত্তর: ‘গান’ কোনো একটা ভাব বা বিষয় নিয়ে রচিত হয়।

প্রশ্ন ১৩। কীসে কোনো একটা মিল বারবার ফিরে আসে?
উত্তর: গানে কোনো একটা মিল বারবার ফিরে আসে।

প্রশ্ন ১৪। কবিতা আবৃত্তি করা হয়, আর পান কী করা হয়?
উত্তর: কবিতা আবৃত্তি করা হয়, আর গান গাওয়া হয়।

প্রশ্ন ১৫। গানে সুর ঠিক রাখার জন্য কী ব্যবহার করা হয়?
উত্তর: গানে সুর ঠিক রাখার জন্য হারমোনিয়াম, পিয়ানো ইত্যাদি ব্যবহার করা হয়।

প্রশ্ন ১৬। গানে তাল ঠিক রাখার জন্য কী ব্যবহার করা হয়।
উত্তর: গানে তাল ঠিক রাখার জন্য তবলা, ঢোল ইত্যাদি ব্যবহার করা হয়।

প্রশ্ন ১৭। যিনি ‘গান’ লেখেন তাঁকে কী বলে?
উত্তর: যিনি ‘গান’ লেখেন তাঁকে গীতিকার বলে।

প্রশ্ন ১৮। গানে যিনি সুর দেন তাঁকে কী বলে?
উত্তর: গানে যিনি সুর দেন তাঁকে সুরকার বলে।

প্রশ্ন ১৯। যিনি গান গেয়ে শোনান, তাঁকে কী বলে?
উত্তর: যিনি গান গেয়ে শোনান, তাঁকে গায়ক বা শিল্পী বলে।


৬ষ্ঠ শ্রেণির বাংলা ৬ষ্ঠ অধ্যায় ২য় পরিচ্ছেদ সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন

প্রশ্ন ১। তোমরা কি ‘আমরা সবাই রাজা’ গানের লেখকের নাম জানো? লেখক বাংলা সাহিত্যের শ্রেষ্ঠ কবি বলা হয় কেন বলতে পারবে? তোমরা কি বলতে পারবে এই লেখক আর কী কী পরিচয়ে পরিচিত?

উত্তর: আমরা সবাই রাজা’ গানটির লেখক রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বাংলা সাহিত্যের সেরা কবি। মহাকাব্য ব্যতীত সাহিত্যের সকল শাখায় ছিল তাঁর দীপ্ত পদচারণা। ১৯১৩ সালে ‘গীতাঞ্জলি’ কাব্যের জন্য দক্ষিণ এশিয়ায় সাহিত্যে প্রথম নোবেল পুরস্কার লাভ করেন। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর পৃথিবীর একমাত্র কবি যার লেখা সংগীত দুই দেশের জাতীয় সংগীতের মর্যাদা লাভ করেছে। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বিশ্বকবি, কবিগুরু ইত্যাদি নামেও পরিচিত ছিলেন। তিনি ভানুসিংহ ছদ্মনামে মাঝে মাঝে লেখালেখি করতেন।

প্রশ্ন ২। ‘আমরা যা খুশি তাই করি, তবু তার ধূশিতেই চৰি’- ‘আমৱা সবাই রাজা’ গানটিতে উদ্ধৃত চরণ দু’টি দ্বারা কী বোঝানো হয়েছে।

উত্তর: উদ্ধৃত চরণ দুটি দ্বারা অধিকার চেতনা জাগ্রত করার প্রেরণা দেওয়া হয়েছে। আমাদের ইচ্ছামতো কাজ করার অধিকার রয়েছে। আমরা যখন নিজেদেরকে স্বাধীন, শৃঙ্খলমুক্ত ভাবতে সক্ষম হব তখনই আমরা অধিকার সচেতন হতে পারব। তখন আর কেউ আমাদের কথা, কাজ, চিন্তাশক্তিকে নিয়ন্ত্রণ করতে সক্ষম হবে না। আর যদি আমরা দাসত্বের শৃঙ্খলত্বে আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে পড়ি তাহলে আমরা আমাদের স্বাধীনতা হারাব। আমরা কারও অধীন নই। তবে আমরা দেশের শৃঙ্খলা বজায় রেখে কাজ করি। আমরা দেশের আইনের প্রতি প্রস্থাশীল।

প্রশ্ন ৩। আমরা সবাই রাজা’ গানটি পড়ে তুমি কী বুঝতে পারলে?

উত্তর: আমরা সবাই রাজা’ গানটি মূলত মানুষের স্বাধীনতা আর সাম্যের বর্ণনা দিয়েছে। মানুষ ঐক্যবদ্ধ হয়ে যে বিপুল শক্তির জোগান দিতে পারে তার কথা গানটিতে আলোকপাত করা হয়েছে। গানটিতে মানুষের অধিকার বোধ জাগিয়ে তোলার মন্ত্রণা দেওয়া হয়েছে।

সব মানুষ সমান- এই মনোভাবে যখন সবাই ঐকাবস্থ হয় তখন তারা যেকোনো বিরুদ্ধ শক্তিকে প্রতিরোধ করতে সক্ষম হয়। দাসত্বের শৃঙ্খল থেকে বেরিয়ে এসে নিজের মতো মাথা উঁচু করে বাঁচার প্রেরণা গানটিতে রয়েছে। গানটিতে শিশুমনে দেশপ্রেম জাগ্রত হওয়ার বীজ বপন করা হয়েছে। ফলে শিশুরা দেশের প্রতি তাদের দায়বন্ধতা উপলব্ধি করতে শেখে। দেশের সকল শ্রেণি-পেশার মানুষদেরকে গ্রন্থা-ভক্তি করার মূল্যবোধ তাদের মধ্যে জেগে ওঠে। সবাইকে সাথে নিয়ে, সবাইকে নিজ নিজ জায়গা থেকে গুরুত্ব দিয়ে দেশ শাসন করলে সফল হওয়ার আভাস গানটিতে পাওয়া যায়।

প্রশ্ন-৪। গান কী? গান লেখার সময় কী বিষয়ে খেয়াল রাখতে হবে?

উত্তর: সুর করে গাওয়া কথাকে গান বলে। কোনো একটা ভাব বা বিষয় নিয়ে গান রচিত হয়। গানের মধ্যে বিশেষ কোনো আবেগ বা অনুভূতি প্রকাশ পায়। গানের কথা যাঁরা লেখেন, তাঁদের বলা হয় গীতিকার। গীতিকাররা গানের কথাকে কবিতার মতো করে লেখেন। গানের কথা অনুযায়ী নানা রকম নামকরণ করা হয়, যেমন— পল্লিগীতি, রবীন্দ্রসংগীত, নজরুলগীতি, আধুনিক ইত্যাদি। কবিতার মতো গানও তাল দিয়ে পড়া যায়।

গানেও এক লাইনের শেষ শব্দের সঙ্গে পরের লাইনের শেষ শব্দে মিল থাকে। তবে কোনো একটা মিল গানের মধ্যে বারে বারে ফিরে আসে। কবিতা আবৃত্তি করা হয়, আর গান গাওয়া হয়। এ জন্য পানের অপর নাম সংগীত। গানের কথায় নানা রকম সুর ও তাল থাকে। এই সুর ও তাল ঠিক রাখার জন্য বিচিত্র ধরনের বাদ্যযন্ত্র বাজানো হয়, যেমন হারমোনিয়াম, তবলা, ঢোল, একতারা, তানপুরা, পিটার ইত্যাদি। যাঁরা বাদ্যযন্ত্র বাজান তাঁদের বলা হয় বাদক বা যন্ত্রশিল্পী। যারা গানে সুর দেন তাঁদের বলা হয় সুরকার। আর যিনি গান গেয়ে শোনান তাঁকে বলা হয় গায়ক বা কণ্ঠশিল্পী । পান যিনি লেখেন তাঁকে বলা হয় গীতিকার। বিচিত্র বিষয় নিয়ে গান লেখা যায়। তবে গান লেখার সময় কিছু বিষয়ে খেয়াল রাখতে হয়।

গান লেখার সময় যে বিষয়ে খেয়াল রাখতে হবে

১. গানের লাইনের শেষে মিল শব্দ আছে কি না।
২. লাইনগুলো নির্দিষ্ট দৈর্ঘ্যের কি না।
৩. এটি পদ্য-ভাষায় লেখা কি না।
৪. সুর করে পাওয়া যায় কি না।
৫. গানের কথা ও সুর শ্রুতিমধুর কি না।
৬. যে উদ্দেশ্যে গান লেখা, তার যথার্থ প্রতিফলন ঘটেছে কি না।


আরও দেখুন: ৬ষ্ঠ শ্রেণির বাংলা ৪র্থ অধ্যায় – চারপাশের লেখার সাথে পরিচিত হই
আরও দেখুন: ৬ষ্ঠ শ্রেণির বাংলা ৫ম অধ্যায় ১ম পরিচ্ছেদ – প্রায়োগিক লেখা
আরও দেখুন: ৬ষ্ঠ শ্রেণির বাংলা ৫ম অধ্যায় ২য় পরিচ্ছেদ – বিবরণমূলক লেখা
আরও দেখুন: ৬ষ্ঠ শ্রেণির বাংলা ৫ম অধ্যায় ৩য় পরিচ্ছেদ – তথ্যমূলক লেখা
আরও দেখুন: ৬ষ্ঠ শ্রেণির বাংলা ৫ম অধ্যায় ৪র্থ পরিচ্ছেদ – বিশ্লেষণমূলক লেখা
আরও দেখুন: ৬ষ্ঠ শ্রেণির বাংলা ৫ম অধ্যায় ৫ম পরিচ্ছেদ – কল্পনানির্ভর লেখা
আরও দেখুন: ৬ষ্ঠ শ্রেণির বাংলা ৬ষ্ঠ অধ্যায় ১ম পরিচ্ছেদ – কবিতা


আশাকরি “৬ষ্ঠ শ্রেণির বাংলা ৬ষ্ঠ অধ্যায় ২য় পরিচ্ছেদ প্রশ্ন উত্তর” আর্টিকেল টি আপনাদের ভালো লেগেছে। আমাদের কোন আপডেট মিস না করতে ফলো করতে পারেন আমাদের ফেসবুক পেজ, এবং লাইভ ক্লাস করতে সাবক্রাইব করতে পারেন আমাদের ইউটিউব চ্যানেল।